বিশ্ব শিশু দিবস উপলক্ষে কামরুন নাহার মুন্নীর কবিতা

আজ বিশ্ব শিশুদিবস। পৃথিবীর সকল শিশুর জীবন নিরাপদ, আনন্দময় ও শান্তিপূর্ণ হোক। কবি সুফিয়া কামালের ‘আজিকার শিশু’ কবিতাটি পড়ে নিজের সম্পর্কে খুব গর্ববোধ করতাম। ছোট্টমণিরা, আজকের দিনে তোমাদের শুভাশিস জানাতে তুলে ধরছি –

এ যুগের শিশু

-কামরুন নাহার মুন্নী

কেমন আছো তোমরা সবাই,

এ যুগের সোনামণি?

আমরা পড়েছি শিথিল হয়ে

তোমাদের জাগরণী।

মনে পড়ে যায় ছোট্টবেলার

মধুময় শৈশব,

হেসে,খেলে কতো কাটিয়েছি দিন

উচ্ছ্বল কলরব!

শরতের ভোরে ঝরা শেফালি

নিয়েছি কোচড় ভরে,

কার মালা হলো সবচেয়ে বড়ো

দেখেছি শূণ্যে ধরে।

সকালবেলায় স্কুলে গেছি

দল বেঁধে মিলে সবে,

তোমরা যাও বাবা, মা’র সাথে

নিঃশব্দে নিরবে !

হৈচৈ করে ফিরেছি আবার

গলাগলি করে হাতে,

ব্যাগের ভারে ক্লান্ত তুমি

ফিরছো মায়ের সাথে।

উড়িয়েছি ঘুড়ি খোলা আকাশে

লাল,সবুজ রঙিন

তোমরা আঁকছো ঘুড়ির ছবি

বিরস তাইতো দিন !

সুর করে স্যার পড়িয়ে যেতেন

আমরাও সুর করে,

ছড়া, কবিতা,নামতার পাঠ

সকলে সমস্বরে।

তোমাদের স্যার পড়া দিয়ে দেন

হোমওয়ার্ক ভরা খাতা,

কোচিং ক্লাস, প্রাইভেট পড়ো

পাতার পরে পাতা।

বিকেল হলে খেলার মাঠে খেলেছি

কতো যে খেলা,

তুমি খেলো গেম একাকী ঘরে

মলিন তোমার বেলা।

লজেন্স, আচার যা কিছু পেতাম

খেয়েছি তা ভাগ করে,

তুমি খাও একা, কেউ না দেখে

সেই ভয়ে যাও সরে।

আমাদের ছিলো খোলা আকাশ

জল থৈ থৈ নদী,

তোমরা রাখো জানালা বন্ধ

ধুলো ঢুকে যায় যদি !

পাখির মতো উড়েছি আমরা

যদিও ছিলোনা ডানা,

ঘর থেকে যাবে বেরিয়ে কোথাও

তাও তোমাদের মানা।

প্রকৃতির সাথে মিশেছি আমরা

ওদেরই অংশ হয়ে,

ছকে বাঁধা থাকে তোমার জীবন

মন যায় ক্ষয়ে ক্ষয়ে !

প্রযুক্তি আর মেকি সভ্যতা

তোমাকে করেছে গ্রাস,

“হতে হবে বড়ো সবার চেয়ে”

মনে থাকে সেই ত্রাস।

অঙ্কুরে যদি পাথর চাপে

চারাগাছ যায় বেঁকে,

রুদ্ধশ্বাসে প্রহর গোণে

অসহায় থেকে থেকে !

এহেন ধারা তোমার জন্যে

একদম ভালো নয়,

সহজ ধারায় বিকশিত হলে

জীবন করবে জয়।

ফুলের মতো ফুটবে তোমরা

হবে আকাশের নীল,

তোমরা গড়বে নতুন পৃথিবী

আলোকিত ঝিলমিল !

মাতৃছায়া, চান্দ্রা, ভাঙ্গা, ফরিদপুর।

০১.১০.২০২২

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *