খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে আবেদন

:: বিশেষ প্রতিনিধি ::

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসকার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

রোববার বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।

গত ৬ মার্চ পরিবারের পক্ষে খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম সাত্তার আবেদনের চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেন। রোববার সন্ধ্যায় বিষয়টি নাগরিক নিউজকে নিশ্চিত করেছেন এবিএম সাত্তার। তিনি বলেন, আবেদনপত্রে ম্যাডামের স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। ম্যাডামের ছোটভাই (শামীম ইস্কাদার) অসুস্থ থাকায় আমি চিঠিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দিয়েছি। আবেদনপত্রে শামীম ইস্কাদার বলেন, বেগম জিয়ার জীবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষায় দরকার দেশের বাইরে চিকিৎসা। 

খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম সাত্তার জানান, আবেদনের চিঠিটি তিনিই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনও কিছু জানায়নি বিএনপিকে।

এ বিষয়ে জানতে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দারকে টেলিফোন করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।

এর আগেও খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করাতে কয়েকবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে তার পরিবার।

সবশেষ গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে স্থায়ীভাবে মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন শামীম ইস্কান্দার।

প্রতিবারের মতো সেবারও আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবেদনটি নাকচ করে দেয়।

 ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। একই বছরে, আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।

দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন ৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।

২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তি দেয়। এরপর থেকে ছয় মাস পরপর সরকার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে।

সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া। বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন তিনি। আর্থাইটিস, লিভার, কিডনি সমস্যাসহ হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসও রয়েছে তার।

সবশেষ বুধবার রাতে খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে একদিন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার ছেড়ে দেওয়া হয়।

সেদিন রাতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, মেডিকেল বোর্ড আবারও খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিসার জন্য বিদেশে পাঠানোর সুপারিশ করেছে।

গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২৪ মার্চ। নির্বাহী আদেশে সরকার খালেদা জিয়াকে যে দুটি শর্তে মুক্তি দিয়েছে, তার প্রথমটি হলো তাঁকে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। দ্বিতীয় শর্তটি হলো তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *