যুব এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

:: ক্রীড়া প্রতিবেদন ::

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতল বাংলাদেশের যুবারা।

এর আগে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ১০ আসরের মধ্যে এককভাবে ৭ বার চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। একবার শিরোপা জিতে আফগানিস্তান। এবার শিরোপা জিতল বাংলাদেশ। 

২০১২ সালে টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসরে ফাইনাল ম্যাচটি টাই হওয়ায় ভারত-পাকিস্তানকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। 

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপের ফাইনালে আশিকুর রহমান শিবলির সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ তুলেছিল ২৮৩ রান। জবাবে আরব আমিরাত অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ৮৭ রানে। 

শিবলি খেলেন ১৪৯ বলে ১২৯ রানের দারুণ ইনিংস। ১২টি চারের সঙ্গে একটি ছক্কার শট হাঁকান তিনি। তিনে নামা ব্যাটার চৌধুরী মো. রিজওয়ান খেলেন ৬০ রানের ইনিংস। চারে নামা ব্যাটার আরিফুল ইসলাম ৪০ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলেন। ছয়টি চারের শট আসে তার ব্যাট থেকে। শেষে অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি ১১ বলে ২১ রান করেন। 

জবাব দিতে নেমে ২৪.৫ ওভারে ৮৭ রান করে অলআউট হয়েছে পাকিস্তানকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠা স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত। দলটির হয়ে ধ্রুব পরোশর ২৫ রানের ইনিংস খেলেন। ১১ রান করেন তিনে নামা আকসাত রায়। আর কেউ ১০ রানের ঘরে ঢুকতে পারেননি। 

প্রতিপক্ষের রান ৫০ হওয়ার আগেই ৫ উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের যুবারা। এ সময় প্রতিপক্ষকে একাই ধসিয়ে দেন রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ। পরের ৪ উইকেটের ৩টিই নেন এই পেসার। তাঁর দেখানো পথে বাকি বোলাররাও উইকেট উদ্‌যাপন শুরু করেন। এতে করে ৮৭ রানে অলআউট হয় আরব আমিরাত। 

এই রানও করতে পারত না আরব আমিরাত যদি না চারে নেমে এক প্রান্ত আগলে রেখে ধ্রুব পরাশর না খেলতেন। সতীর্থরা যখন আসা-যাওয়ার মিছিলে ছিলেন তখন ধৈর্য ধরে দলের পরাজয় কমানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। তাঁর ব্যাটিং দৃঢ়তা মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষাটা বাড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের একাদশের বাইরে থাকা খেলোয়াড়দের। কেননা, বিজয়ের মাসে বিজয় উল্লাসে মাতোয়ারা হতে বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছিলেন খেলোয়াড়েরা। 

ধ্রুবকে অবশ্য আউট করতে না পারেনি বাংলাদেশি বোলাররা। ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাঁকে না পারলেও অমিদ রেহমানকে আউট করে বাংলাদেশকে শিরোপা উদ্‌যাপনের মুহূর্ত এনে দেন শেখ পারভেজ জীবন।

বাংলাদেশ দলের হয়ে মারুফ মৃধা ও রোহানাত দৌলত বর্ষন ৩টি করে উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট নেন ইকবাল হোসেন ইমন ও শেখ পারভেজ হোসেন জীবন।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৮২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না বাংলাদেশের। ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ৭ রানে আউট হন জিশান আলম। জিশান ফিরলেও বাংলাদেশকে দ্রুত ম্যাচে ফেরান আরেক ওপেনার শিবলি। চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে শুধু দলের হালই ধরেননি দ্রুত রানও তোলেন শিবলি। 

দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে মিলে ১২৫ রান যোগ করেন শিবলি-রিজওয়ান। রিজওয়ান ফিফটি করে ৬০ রানে ফিরলেও সেঞ্চুরি করেছেন শিবলি। টুর্নামেন্টে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করার পথে আরিফুল ইসলামকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৮৬ রানের জুটিও গড়েন তিনি। কাঁটায় কাঁটায় ফিফটি করে আরিফুল আউট হলে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ।

তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে ৮ উইকেটে ২৮২ রান এনে দেন শিবলি। সপ্তম ব্যাটারে হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১৪৯ বলে ১২৯ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। তাঁর দুর্দান্ত ইনিংসটি ১২ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ অ–১৯ দল: ৫০ ওভারে ২৮২/৮ (আশিকুর ১২৯, রিজওয়ান ৬০, আরিফুল ৫০, মাহফুজুর ২১; আইমান ৪/৫২, ওমিদ ২/৪১)।

আরব আমিরাত অ–১৯ দল: ২৪.৫ ওভারে ৮৭ (পরাশর ২৫*, অক্ষত ১১; রোহানাত ৩/২৬, মারুফ ৩/২৯, পারভেজ ২/৭, ইকবাল ২/১৫)।

ফল: বাংলাদেশ অ–১৯ দল ১৯৫ রানে জয়ী।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *