:: গাজীপুর প্রতিনিধি ::
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট কেন্দ্র ৪৮০টি। এর মধ্যে ৪৫২ কেন্দ্রের ফলাফল পাওয়া গেছে। এতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ১ লাখ ৯০ হাজার ৮০০ ভোট। স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন টেবিল ঘড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ১০ হাজার ৩০০ ভোট।
সকাল ৮টায় শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ একটানা চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকাল থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভিড় করেন ভোটাররা। নির্বাচন নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ছিল না প্রার্থীদের।
সকাল থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রের সামনে ছিল ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি। বিশেষ করে নারী ভোটারদের সংখ্যা ছিলো চোখে পড়ার মতো। তবে দুপুরের দিকে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কমে যায়।
নগরে এই প্রথম ইভিএমে ভোট হয়। এ প্রযুক্তির সঙ্গে অনেক ভোটারই অপরিচিত। যে কারণে অনেক কেন্দ্রেই ভোটগ্রহণে ছিল ধীরগতি। বিশেষ করে নারী ও বয়স্করা কিছুটা জটিলতায় পড়েন। তবে তরুণরা স্বাচ্ছন্দ্যেই ভোট দিয়েছেন।
গাজীপুর সিটিতে মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের মধ্যে। দুজনের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তাদের মতোই ভোটের পরিবেশ ভালো বলে জানান আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনূর ইসলাম রনি।
গাজীপুর সিটির ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তিন মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান, শাহনূর ইসলাম রনি এবং জায়েদা খাতুন।
বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে টঙ্গীর আরিচপুর মসজিদ রোডের দারুস সালাম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান।
ভোটদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, ‘জনগণের ভালোবাসা থেকে আমি বলতে পারি, জয়-পরাজয় আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। আমি বিশ্বাস করি, ফয়সালা আসমান থেকে হয়। আল্লাহ যা চান তা জনগণের মাধ্যমে প্রকাশ করবেন।’
আজমত উল্লা খান বলেন, ‘উৎসবমুখর পরিবেশে সকাল থেকে মানুষ ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং একটি সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচন গাজীপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ভোটের যে কোনো ফলাফল অবশ্যই মেনে নেব। আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। সবসময় জনগণের অপিনিয়নের প্রতি আমি শ্রদ্ধা দেখিয়ে আসছি। আজ জনগণ যাকে নির্বাচিত করবে, আমি সেটা অবশ্যই মেনে নেব। আমি রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে সব সময় জনগণের সঙ্গে ছিলাম।’
সকাল ১০টার পর কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। ওই সময় তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমও ভোট দেন।
ভোট দেওয়ার পর জায়েদা খাতুন বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে তার এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ ভালো, সুষ্ঠু ভোট হলে নির্বাচনী ফলাফল যাই হোক তা মেনে নেব।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। পুরুষ ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ট্রান্সজেন্ডার ১৮ জন ভোটার। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি, মোট ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।
নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা হলেন নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খান, টেবিলঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। এ ছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।