:: গাজীপুর প্রতিনিধি ::
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ।
সোমবার (১৫ মে) রাতে নাগরিক নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন দলের উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খান।
ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতেও এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সংগঠনের গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
গত রোববার আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় গাজীপুরের জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগ থেকে চিরতরে বহিষ্কারের সুপারিশ করে দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন নেতারা। বিশেষ করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিষয়ে কথা বলেন তাঁরা। সেখানে জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়টি সামনে আসে। তাঁরা বলেন, জাহাঙ্গীর আলমকে এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নিয়ে কটূক্তি করার জন্য দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে ক্ষমা চাওয়ায় তাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু এখন তিনি আবার দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। শুধু তিনি নন, তাঁর মাকেও প্রার্থী করেছেন। নিজের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পরে মায়ের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সেখানে দলের বিপক্ষে কথা বলছেন। এ জন্য তাঁকে দল থেকে চিরতরে বহিষ্কারের সুপারিশ করেন তাঁরা।
আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে জাহাঙ্গীর আলম নিজে এবং তাঁর মা জায়েদা খাতুন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। যদিও জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা বাতিল হয়। কিন্তু তাঁর মা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন। তাঁর পক্ষে জাহাঙ্গীর আলম ভোটও চাইছেন।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সূত্র জানায়, রোববারের বৈঠকে নেতারা বলেন জাহাঙ্গীর আলম এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। এরপর দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে ক্ষমা চাওয়ায় তাঁর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু এখন তিনি আবার দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। শুধু তিনি নন, তাঁর মাকেও প্রার্থী করেছেন। নিজের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর মায়ের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন তিনি। সেখানে দলের বিপক্ষেও কথা বলছেন। এর আগে ২০১৩ সালে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে জাহাঙ্গীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগ করার অধিকার হারিয়েছেন।
একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা জাহাঙ্গীরের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে একমত হন। পরে সিদ্ধান্ত হয়, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনাকে জানাবেন। জাহাঙ্গীর আলম যাতে দলের কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হতে পারেন, সে সিদ্ধান্তই হয়।
আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমতউল্লা খান। সেখানে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন জাহাঙ্গীর আলম। একই সঙ্গে মা জাহেদা খাতুনকেও প্রার্থী করেন তিনি। ঋণখেলাপির জামিনদার হওয়ায় জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিল হয়। পরে আপিলেও মনোনয়ন ফিরে পাননি।