কিউইদের হারিয়ে সেমির আশা টিকে থাকল পাকিস্তানের

:: ক্রীড়া প্রতিবেদক ::

নিউজিল্যান্ডকে বৃষ্টি আইনে ২১ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার আশা টিকে থাকল পাকিস্তানের। ৮ ম্যাচে চার জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে পাকিস্তান। সমান পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটে এগিয়ে চার নম্বরে রয়েছে কিউইরা।

২১.৩ ওভারে এক উইকেট হারিয়ে যখন স্কোরবোর্ডে পাকিস্তানের ১৬০ রান তখন বৃষ্টি হানা যায়। ৩ ওভার কমিয়ে পাকিস্তানের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৪২ রান। ২৫.৩ ওভারে পাকিস্তান ২০০ করার পর আবারও হানা দেয় বৃষ্টি। শেষ পর্যন্ত খেলা মাঠে না গড়ালে ২১ রানের জয় পায় বাবরের দল। ২৫.৩ ওভারে নিউজিল্যান্ডের রান ছিল ১৭৯ রান। রবীন্দ্র- উইলিয়ামসনের চমৎকার ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানকে দেয়া ৪০২ রানের লক্ষ্য বিফলে গেছে কিউইদের।

৪০১ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ১০ ওভারে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৭৬ রান তোলে পাকিস্তান। ১৪ দশমিক ৪ ওভারেই দলীয় একশো রান ছাড়ায় পাকিস্তান। ওপেনার ফখর জামান মাত্র ৩৯ বলে তুলে নেন অর্ধশতক। এরপরই যেন আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন এই ব্যাটার। পরের ৫০ রান পূর্ণ করতে খেলেন মাত্র ২৪ বল। অর্থাৎ ৬৩ বলেই তুলে নেন সেঞ্চুরি। এর মাধ্যমে পাকিস্তানিদের মধ্যে বিশ্বকাপের দ্রুত শতকের রেকর্ড নিজের নামে লেখান এই পাক ওপেনার। সেঞ্চুরি করার পথে তিনি ৯টি ছক্কা মারেন। ২০ ওভারেই আগেই দেড়শো ছাড়ায় পাকিস্তান। আর ইনিংসের ১৯ দশমিক ২ বলের সময়ই নিজের সেঞ্চুরির দেখা পান ফখর। অন্যদিকে দারুণভাবে তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন অধিনায়ক বাবর।

ইনিংসের ২১ দশমিক ৩ ওভারের সময় ম্যাচে বৃষ্টি হানা দেয়। দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে খেলা। এতে কমে আসে ইনিংসের দৈর্ঘ। পাকিস্তানের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ৩৪২ রানের। বৃষ্টির পর আবার খেলা শুরু হয়। তবে ইনিংসের ২৫ দশমিক ৩ ওভারের সময় আবার হানা দেয় বৃষ্টি। দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও বৃষ্টি না থামায় শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি আইনে খেলা নিষ্পত্তি করেন ম্যাচ অফিশিয়ালরা। খেলা বন্ধ হওয়ার আগে পাকিস্তান এক উইকেট হারিয়ে তোলে ২০০ রান। এতে ডিএল মেথডে ২১ রানে জয় পায় পাকিস্তান।

এর আগে টস জিতে কিউইদের ব্যাটিংয়ে পাঠান পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। উদ্বোধনী জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে ভালো শুরু এনে দেন ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র। দুজন যোগ করেন ৬৮ রান। হাসান আলীর বলে ৩৫ করে কনওয়ে ফিরলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন রবীন্দ্র ও কেন উইলিয়ামসন।

ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করে একটা পর্যায়ে তিন অঙ্কের দিকেও এগিয়ে যান দুজনে। ইনিংসের ৩৪ ওভারে সেটা পেয়েও যান রবীন্দ্র। ২৩ বছর বয়সী বাঁহাতির এটি টুর্নামেন্টে তৃতীয় শতক। বয়স পঁচিশ হওয়ার আগে এটিই কোনো ব্যাটসম্যানের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি শতক। এতে পেছনে পড়ে গেছে শচীন টেন্ডুলকারের দুই শতকের রেকর্ড। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৮০ রান যোগ করেন রবীন্দ্র ও উইলিয়ামসন। সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে আউট হন এ ম্যাচে দলে ফেরা উইলিয়ামসন। ইফতিখারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৯৫ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

সেঞ্চুরি করা রবীন্দ্র শেষ পর্যন্ত ৯৪ বলে ১৫টি চার ও ১টি ছয় মারেন। তাকে আউট করেন ওয়াসিম জুনিয়র। এরপর মার্ক চাপম্যান ও ড্যারেল মিচেলরা নিউজিল্যান্ডের রানের চাকা ঘুরাতে থাকেন। দলীয় ৩১৮ রানে বিদায় নেন মিচেল। ১৮ বলে ২৯ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন তিনি। চাপম্যান ২৭ বলে ৩৯ রান করে ফেরেন সেই ওয়াসিমের বলে। মাত্র ২৫ বলে ৪১ রান যোগ করেন গ্লেন ফিলিপসও। তার উইকেটও নেন ওয়াসিম। মিচেল স্যান্টনার ফিলিপসকে ভালো সঙ্গ দিয়ে করেন ২৬ রান। টম লাথামের ব্যাট থেকে আসে ২ রান।

পাকিস্তানের পক্ষে ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন ওয়াসিম জুনিয়র। ৯০ রানে উইকেটশূন্য ছিলেন শাহিন আফ্রিদি। ৮৫ রানে ১ উইকেট নেন হারিস রউফ।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *