:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সাবেক চেয়ারম্যান ইমরান খান বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) কামার জাভেদ বাজওয়া ডোনাল্ড লুর নির্দেশে সবকিছু করেছিলেন।
সোমবার কারাচত্বরে মামলার শুনানি চলাকালে অনানুষ্ঠানিক আলাপে ইমরান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘(এ মামলায়) জেনারেল বাজওয়া ও মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদেরও সাক্ষী করব। ডোনাল্ড লুর (দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী) নির্দেশনায় জেনারেল বাজওয়াই সবকিছু করেছেন।’
সাইফার মামলার শুনানির সময় আদিয়ালা কারাগারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব বলেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ২০২৩-এর অধীনে প্রতিষ্ঠিত বিশেষ আদালত আদিয়ালা কারাগারে মামলাটির শুনানি হয়েছেছে একটি খোলা আদালতে। এখানে ইমরান খান ও তার সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বন্দী রয়েছেন।
২১ নভেম্বর ইসলামাবাদ হাইকোর্ট জেল ট্রায়াল বাতিল করার পর আদালত নতুন করে বিচার পরিচালনা করছে। ২৩ অক্টোবর তাদের দুজনকেই অভিযুক্ত করা হয়েছিল কিন্তু আইএইচসি আদেশের পরে অভিযুক্তি বাতিল হয়ে যায়।
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তার দল ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জিতবে জয়ী হবে। তিনি আরও বলেছেন, তাকে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল। যেসকল পিটিআই নেতা তার ওপর আস্থা রেখেছেন তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ।
নভেম্বরে পিটিআই সভাপতি পারভেজ এলাহি দাবি করেছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কর্মকর্তারা নিয়মিত আদিয়ালায় ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করেন। এ খবর তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি জেলে তাকে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়নি বলেও জানান তিনি।
স্ত্রী বুশরা বিবির সাবেক স্বামী খাওয়ার মানেকা তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দায়ের করেছিল সে সম্পর্কেও কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বিয়ের পরই প্রথম তিনি স্ত্রীর মুখ দেখেন। বুশরার ছেলেদের মায়ের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
গত বছরের এপ্রিলে দেশটির পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করা হয়েছে।
ক্রিকেটতারকা থেকে রাজনীতিতে আসা ইমরান খান তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা বলে আসছেন। তাঁর অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের ইশারায় তাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইমরান খানকে কারাগারে রেখেই পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারিত রয়েছে।
দুর্নীতির একটি মামলায় গত আগস্টে ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয় পাকিস্তানের একটি আদালত। ইমরানের দাবি, বর্তমান পিএমএল–এন সরকার ও সেনাবাহিনীর চক্রান্তে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে এসব মামলা হয়েছে, যাতে তিনি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন।