চলে গেলেন নূরে আলম সিদ্দিকী

:: নাগরিক প্রতিবেদক ::

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী আর নেই।

বুধবার ভোররাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে এবং ঝিনাইদহ-২ আসনের সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী আজ সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তাহজীব আলম সিদ্দিকী জানান, আজ ভোর ৪টা ৩৭ মিনিটে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নূরে আলম সিদ্দিকীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

নূরে আলম সিদ্দিকী ছয় দফা আন্দোলন ও ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

নূরে আলম সিদ্দিকীর মরদেহ হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে ঝিনাইদহের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। বেলা ১১টায় পৌঁছানোর কথা। মরদেহ ঝিনাইদহ শহরের চাকলাপাড়ায় তাঁর বাড়িতে রাখা হবে। বাদ জোহর সরকারি বালক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা হবে। জানাজা শেষে মরদেহ আবার ঢাকায় নেওয়া হবে। সাভারের জিনারীবাজারে নিজের তৈরি করা মসজিদে সর্বশেষ জানাজা শেষে সেখানেই তাঁকে দাফন করা হবে। 

নূরে আলম সিদ্দিকী ১৯৪০ সালের ২৬ মে ঝিনাইদহে জন্মগ্রহণ করেন।

৯৭০-১৯৭২ মেয়াদে ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ১ মার্চ থেকে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ২ মার্চ বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের বটতলায় ডাকসু ও ছাত্রলীগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ছাত্র-জনতার এক বিশাল সমাবেশে।

এ সমাবেশে শিল্পী শিবনারায়ণ দাশের পরিকল্পনা ও অঙ্কনে সবুজ পটভূমিকার ওপর লাল বৃত্তের মাঝখানে বাংলার সোনালি মানচিত্র-সংবলিত স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ডাকসুর তৎকালীন সহসভাপতি আ স ম আব্দুর রব। এ সভায় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ, ডাকসু সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস মাখন ও পূর্বতন ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ।

একাত্তরের ১০ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক ছাত্রাবাসের প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উদ্যোগে একটি জনসভা হয়। এ সভার সভাপতিত্ব করেন নূরে আলম সিদ্দিকী। মহান মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীরও অন্যতম কর্ণধার ছিলেন তিনি।

১৯৭৩ সালে যশোর-২ আসন থেকে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে সপ্তম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নির্বাচনে হেরে যান।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *