পাকিস্তানে ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি

:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::

পাকিস্তানে ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির রেকর্ড হয়েছে। দেশটির ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) বলছে, দেশটিতে মূল্যস্ফীতি আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে।

পাকিস্তানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৩১ দশমিক ৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে।

১৯৬৫ সালের জুলাই থেকে তথ্য সংরক্ষণ শুরুর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে। এর আগে, ১৯৭৫ সালের এপ্রিলে দেশটির মূল্যস্ফীতি ২৯ শতাংশের সামান্য বেশি রেকর্ড করা হয়েছিল।

পাকিস্তানের পরিসংখ্যান ব্যুরো জানায়, দেশটিতে মাসওয়ারি হিসাবে মুরগির দাম ফেব্রুয়ারিতে আগের মাসের চেয়ে ১৯ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে পাকিস্তানে। ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে বেড়েছে ১৭ দশমিক ২১ শতাংশ আর সিগারেটের দাম বেড়ে গেছে প্রায় ১৬ শতাংশ।

চলতি বছরের জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে মাসিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।

পাকিস্তানের জ্বালানি ও খাদ্যের দাম বাদ দিয়ে গণনা করা মূল মূল্যস্ফীতিও গত মাসে শহরাঞ্চলে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে ২১ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, বেশিরভাগ পণ্য ও সেবার মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পাকিস্তানে আবাসন, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানির মূল্য গত ফেব্রুয়ারিতে গত বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে। গণপরিবহন খাতের ব্যয় ফেব্রুয়ারিতে বেড়েছে ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। রেস্তোরাঁ ও হোটেল সংক্রান্ত মূল্য বেড়ে গেছে ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ।

পাকিস্তান পরিসংখ্যান ব্যুরো (পিবিএস) জানিয়েছে, কলা, মুরগি, চিনি, রান্নার তেল, গ্যাস এবং সিগারেটের দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি অব্যাহত আছে। ফলে, শর্ট টার্ম ইনফ্লেশন (এসপিআই) দ্বারা পরিমাপ করা মূল্যস্ফীতি ২৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহে ৪১.৫৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৩৮.৪২ শতাংশ।

২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর শেষ হওয়া সপ্তাহে এসপিআই মূল্যস্ফীতি ছিল ৪২.৭ শতাংশ। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বরের পর আবার দেশটির সাপ্তাহিত মূল্যস্ফীতি ৪০ শতাংশ ছাড়াল।

তবে, সপ্তাহ থেকে সপ্তাহের মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ২.৭৮ শতাংশে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২.৮৯ শতাংশ। গণনা করা ৫১টি পণ্যের মধ্যে ৩৩টির দাম বেড়েছে, ৬টির দাম কমেছে এবং ১২টির দাম স্থিতিশীল আছে।

গত বছরের একই সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে যেসব পণ্যের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সেগুলো হলো- পেঁয়াজ ৩৭২ শতাংশ, সিগারেট ১৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ, গ্যাস ১০৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ, মুরগি ৮৫ দশমিক ৭ শতাংশ, ডিজেল ৮১ দশমিক ৩৬ শতাংশ, ডিম ৭৫ দশমিক ৮১ শতাংশ, ইরি চাল ৭৫ দশমিক ৪১ শতাংশ, ভাঙ্গা বাসমতী চাল ৭৪ দশমিক ১৬ শতাংশ, কলা ৭২ দশমিক ২২ শতাংশ, ধোয়া মুগ ডাল ৭০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এর বিপরীতে, টমেটোর দাম কমেছে ৬৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ, মরিচগুঁড়া ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ।

দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, ঋণদাতারা এখনো বিদ্যুৎ খাতের ঋণ নিয়ে ইসলামাবাদের সঙ্গে আলোচনা করছে।

পাকিস্তানের অর্থনীতি অস্থিতিশীল অবস্থায় আছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। যা ৩ সপ্তাহের আমদানির জন্য যথেষ্ট নয়। চীন এ সপ্তাহে ৭০০ মিলিয়ন ডলার পুনঃঅর্থায়নের ঘোষণা দিয়েছে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *