পৃথিবী শিশুর জন্য ফুলের বাগান হয়ে যাক

:: কনক চাঁপা ::

আমরা মুসলমানরা জানি আল্লাহ যখন যার উপর খুশি হন তখন তিনি তাকে কন্যা সন্তান দান করেন কিন্তু এরপর থাকে আসল সন্ধি।তিনি দেখেন তাঁর দেয়া এই নেয়ামত অথবা আমানতের দায়িত্ব কিভাবে পালন করেন বাবা-মা! এটা একটা আনন্দদায়ক পরীক্ষা বটে।

আমরা যেমন বিত্তেরই হই না কেন সন্তানের দেখভাল করা আমাদের মা বাবার দায়িত্ব। আমরা জানি বিচারহীনতা আমাদের দেশে পানিভাত। সেখানে অনেক কারণে শিশুহত্যা হয়।

পিডোফাইল, পারিবারিক কলহের জের , টাকার জন্য লুকিয়ে রেখে আমাদের দেশে কম বাচ্চা জীবন দিলো? জিহাদের কথা মনে আছে? ওয়াসার পানির গহীন গর্তে সেঁধিয়ে গেলো! তাকে কেউ জ্যান্ত তুলতে পারলো না! আরেকটা বাচ্চা কালভার্টের নীচে কচুরিপানার তলে আটকে মরে শ্রোতে কোথায় হারিয়ে গেলো! আর অপহরণের জন্য আমার তো মনে হয় দুইদিন পরপরই বাচ্চা খুন হয়।

আর পেডোফাইল হলো সবচেয়ে ভয়ংকর! শিশুধর্ষক, খবরে পড়েছিলাম পেডোফাইল কন্যাশিশুকে ব্লেড দিয়ে যোনীপথ কেটে ধর্ষণ করে মেরে কমোডে গুঁজে রেখেছে। এগুলো ভাবতেই চাইনা কিন্তু অনেক দুঃখে এভাবে লিখছি!

ধরা পড়ে সবাই, আগে আর পরে কিন্তু ঠিকই ছাড়া পায়। কিন্তু মরে যাওয়া শিশুগুলো!তাদের দোষ! তাদের কষ্টগুলো! তাদের ছুঁড়ে দিয়ে যাওয়া অভিশাপগুলো?

বিচার, আইন এগুলো তো আছেই কিন্তু আমার প্রশ্ন বাবা-মায়ের কাছে, সন্তানের সুরক্ষা দিতে পারেন না, জন্ম দেন কেন! জানেন না আমাদের পুরো দেশ নানা রকম খানাখন্দে ভরা! যে কোন কারনেই শিশু নিখোঁজ হয় এবং তারপর খুন হয়, এতে নিশ্চয়ই অনেক সময় লাগে,লাগেনা? কতটা লম্বা সময় আপনার সন্তান আনএটেন্ডেন্ট( কারো জিম্মায় ছাড়া)থাকে হিসাব করেছেন? অপহরণ তো টাকার জন্য করে, কিন্তু পেডোফাইল? চাচা বাবা নানা যে কেউই হতে পারে! সেক্ষেত্রে বাবা নন,একমাত্র মা-ই আসলে শিশুর রক্ষাকারী। জীবনের উন্নয়নের চেয়ে সন্তান রক্ষার দায়িত্ব অনেক বড়।

আলীনার হারিয়ে যাওয়ার ছবি দেখেই আমার মনে হয়েছিল তাকে আর পাওয়া যাবেনা কারণ এই ডিজিটাল যুগে একটা বিড়াল হারালেও এক ঘন্টার মধ্যে খোঁজ পাওয়া যায়।আর এই ফুলের মতো শিশুটি? অন্য একটা লোক যখন নিয়ে গেলো তখন মা কোথায় ছিল! আমরা তো আমাদের কন্যাশিশুকে এক বেলার জন্যও নিজের হাতছাড়া করি না! আমরা কি তাহলে বেশি ভিতু? না,আমরা দায়িত্বশীল।

সব বাবা-মায়েদের বলি নিজের বাচ্চা প্রতিটি সেকেন্ড নিজ দায়িত্বে রাখুন, চাকরি করার জন্য কাজের লোকের কাছে বাচ্চা রেখে যাওয়া কাজের কথা নয়।যে বেতন পান তার অর্ধেক যায় কাজের লোকের পেছনে, তার বদলে কাজের লোকের অবহেলা পায়, লুকানো মাইর খায়, বাজে জিনিস শেখে ,তাতে সন্তানের মন্দ বৈ ভালো হয়না।বেতনের লাভের গুড় পিঁপড়া খায়।

আর যারা নিম্ন আয়ের মানুষ সেই মায়েরা পেটে বুকে বাচ্চা বেঁধে কাজ করুন।এমন উদাহরণ আমাদের আদিবাসীদের আছে।তারা উঁচু নীচু পাহাড়ে পারলে আমরাও সমতলে পারবো। আর যদি বাচ্চাকে সার্বক্ষণিক ভাবে দেখভাল না পারেন তো পেটে ধরে তাদের পৃথিবীতে আনবেন না।এভাবে অপহরণ হয়ে ধর্ষিত হয়ে যে বাচ্চা মারা যায় তার অর্ধেক দোষ আমি মা কে দিবো।

আমরা বাচ্চার খণ্ডিত লাশ চাই? চাইনা।আমরা চাই এই পৃথিবী শিশুর জন্য ফুলের বাগান হয়ে যাক।

লেখক: জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পী

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *