সোহরাওয়ার্দীতে বিএনপিকে গণসমাবেশের অনুমতি

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

২৬ শর্তে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে গণসমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ওইদিন দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সমাবেশ করতে পারবে দলটি।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (সদরদপ্তর ও প্রশাসন) আব্দুল মোমেন সই করা এক লিখিত স্মারকে এই তথ্য জানানো হয়।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বরাবর ডিএমপির চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া প্রসঙ্গে আপনার (রিজভী) ২০ নভেম্বর দাখিল করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিপরীতে গণসমাবেশ করলে যানজট ও নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি হবে বিধায় ওই স্থানের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে আগামী ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো।

তবে বিএনপি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গণসমাবেশ করতে অনড়। এ জন্য গত ২০ নভেম্বর ডিএমপির কাছে আবেদনও করে তারা।

যে ২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দীতে বিএনপিকে গণসমাবেশের অনুমতি

১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে।

২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রের উল্লেখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

৩. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

৪. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।

৫. স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের ভেতরে ও বাইরে উন্নত রেজুলেশনের সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রতিটি প্রবেশ গেটে আর্চওয়ে স্থাপন করতে হবে এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভিউকল স্ক্যানারের মাধ্যমে সমাবেশস্থলে আসা সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে।

৮. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৯. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে ও আশপাশে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

১০. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।

১১. সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।

১২. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

১৩. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।

১৪. অনুমতি দেওয়া সময়ের মধ্যে সমাবেশের কার্যক্রম শেষ করতে হবে।

১৫. সমাবেশ শুরুর দুই ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।

১৬. সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থায় সমবেত হওয়াসহ যান ও মানুষ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা করা যাবে না।

১৭. পতাকা, ব্যানার ও ফেস্টুনের আড়ালে কোনো ধরনের লাঠি-রড ব্যবহার করা যাবে না।

১৮. আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কার্যকলাপ করা যাবে না।

১৯. রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ ও বক্তব্য দেওয়া যাবে না।

২০. উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।

২১. মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে আসা যাবে না।

২২. নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্কিং করতে হবে, মূল সড়কে কোনো পার্কিং করা যাবে না।

২৩. সমাবেশস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।

২৪. স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করে সমাবেশ করতে হবে।

২৫. উল্লেখিত শর্তাবলি পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।

২৬. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ছাড়া এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *