মরক্কোর ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ২০০০ দাঁড়িয়েছে

:: নাগরিক ডেস্ক ::

মরোক্কোর মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে, মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০১২ জন এবং আহত হয়েছে ২০৫৯ জন। আহতদের মধ্যে ১৪০৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

মরক্কোর রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন এবং বেঁচে যাওয়াদের জন্য আশ্রয়, খাবার এবং অন্যান্য সাহায্যের নির্দেশ দিয়েছেন।

ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মারাকেশ শহর থেকে ৭১ কিলোমিটার দূরে এটলাস পর্বতমালা এলাকার ১৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার গভীরে। স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর লোকজন ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন।

এছাড়া ভূমিকম্পটির ১৯ মিনিট পর আবারও ৪ দশমিক ৯ মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয়। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বেশ কিছু গ্রাম পুরোপুরি সমতল হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। 

মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, দেশটির আল হাউজ প্রদেশে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, আর এর পরে রয়েছে তারউদান্ত প্রদেশ। মারাকেশে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম, যদিও ইউনেস্কো-সুরক্ষিত পুরোনো এই শহরটিও ভূমিকম্পে যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

ইউএসজিএস বলছে, ১৯৬০ সালের পর শুক্রবার এই ভূমিকম্প দেশটিতে সবচেয়ে প্রাণঘাতী। ওই বছর দেশটিতে শক্তিশালী এক ভূকম্পনে কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। তবে শুক্রবারের ভূমিকম্পটি মরক্কোতে গত এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের মধ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প ছিল।

ভূমিকম্পের ফলে বিপুল পরিমাণ বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বিশেষ করে কাদামাটি এবং পাথরের তৈরি ঘরগুলোর অধিকাংশই বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এসব বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপের নিচে বিপুল পরিমাণ মানুষ আটকা পড়েছে। স্থানীয়রা খালি হাতেই ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। শোকার্ত স্বজনদের হাহাকারে ভারী হয়ে উঠেছে মারাকেশের আকাশ-বাতাস। 

মরক্কোর এই ভূমিকম্পে বিপুল পরিমাণ মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর বিপুল পরিমাণ মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাত কাটায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও থেকে দেখা গেছে, মারাকেশের বিপুল পরিমাণ মানুষ আশ্রয়ের জন্য দিগ্‌বিদিক ছুটছে। কিন্তু নির্ধারিত কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় গতকাল শনিবার দিবাগত রাতেও বিপুল পরিমাণ মানুষ খোলা আকাশের নিচেই রাত কাটায়।

জাতিসংঘ বলেছে, তারা মরক্কো সরকারকে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে প্রস্তুত। এছাড়া স্পেন, ফ্রান্স এবং ইসরায়েলসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে একই ধরনের প্রতিশ্রুতি এসেছে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *