মিয়ানমারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা

:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে দেশটির সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তি ও ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তি ও ছয়টি প্রতিষ্ঠান নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরা সবাই জান্তাকে যুদ্ধবিমানের জ্বালানি সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং আমদানি ও মজুত করতে সহায়তা করে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর অবিরাম বিমান ও বোমা হামলা চালাতে সক্ষম করে তুলেছে।

মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমার সেনাবাহিনী জনগণের বিরুদ্ধে নৃশংসতা এবং সহিংসতা চালিয়ে আসছে। তারা উত্তোরত্তর জনবহুল এলাকাগুলোতে বিমান হামলা চালাচ্ছে। মধ্য বার্মার একটি গ্রামে বিমান হামলায় একটি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও উত্তরাঞ্চলীয় কাচিন রাজ্যে বিমান হামলায় ৮০ জন নিহত হয়েছে।

শুক্রবারের বিবৃতিতে ট্রেজারি বিভাগের সন্ত্রাসবাদ ও অর্থনৈতিক গোয়েন্দা শাখার আন্ডার সেক্রেটারি ব্রায়ান নেলসন বলেন, ‘ক্ষমতা দখলের পর থেকে বার্মার সামরিক সরকার দেশটির জনগণকে নিপীড়ন-নির্যাতন করে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে বার্মার শান্তিকামী ও গণতন্ত্রপন্থী বেসামরিক জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; এবং সামরিক বাহিনীর এই নৃশংসতা রোধের জন্য যা যা করা সম্ভব— যুক্তরাষ্ট্র করবে। মিয়ানমারের সামরিক শাসকরা নিজেদের জনগণের ওপরই দুর্ভোগ, যন্ত্রণা আপতিত করছে। বার্মার জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতিতে যুক্তরাষ্ট্র অটল। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী নৃশংসতা চালানোর জন্য যেসব উপাদান ব্যবহার করে সেগুলো তাদের হাতে যাওয়া ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞা একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ মাত্র। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে যারা জ্বালানি, অস্ত্র ও অন্যান্য রসদ সরবরাহ করে আসছেন— যে কোনো সময় তাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হবে।

এ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে ওয়াশিংটনের মিয়ানমার দূতাবাসে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে চাননি।

২০২১ সালে ১ ফেব্রুয়ারি সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেশটিতে বেসামরিক জনগণ ও সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছেই। বিক্ষোভে ব্যাপক দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। গঠিত হয়েছে জান্তাবিরোধী সরকার এবং প্রতিরোধ বাহিনী।

সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর গত দুই বছরের দ্বন্দ্ব সংঘাতে মিয়ানমারে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজার এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *