সাজা স্থগিত হলেও মুক্তি পাচ্ছেন না ইমরান খান

:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় তিন বছরের সাজা স্থগিত করেছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। সাজা স্থগিত হলেও এখনই মুক্তি মিলছে না। আরেক মামলায় তাকে কারাগারে রাখার আদেশ দিয়েছেন বিশেষ আদালত। 

মঙ্গলবার আদালত সংক্ষিপ্ত রায়ে বলেছে, পিটিআই প্রধানকে জামিনে মুক্তি দিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদালত আরও জানায়, সাজা স্থগিত করার বিস্তারিত কারণ পরে জানানো হবে। এই রায়কে ইমরান খানের জন্য বড় আইনি বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। 

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি আমের ফারুক ও বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তিন বছরের সাজা স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে এই রায় দেন।

সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত সরকারি গোপন নথি আইন বিশেষ আদালত অ্যাটোক কারাগারে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। এতে ইমরানকে কারাগারেই আটক রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং আগামী ৩০ আগস্ট গোপন তারবার্তা প্রকাশ (সাইফার মামলা) মামলায় তাকে আদালতে উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে।

রায়ের পর পিটিআইয়ের তথ্য সচিব রওফ হাসানের মতে, তোশাখানা মামলায় ইমরানের সাজা স্থগিত করার পরে অন্য কোনো মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হবে ‘অসদাচরণ এবং অসৎ উদ্দেশ্যমূলক’।

এরপর তিনি আরও বলেন, আমরা ভাগ্যবান যে পাকিস্তানের রাজনৈতিক এবং আইনী ইতিহাসের পুনঃলিখন প্রত্যক্ষ করছি। অবশ্যই ন্যায়বিচারের জয় হবে।

এর আগেও এ মামলায় গত শুক্রবার আরেক দফা শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী আমজাদ পারভেজ। তবে গতকাল তিনি আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন।

সরকার থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকে একের পর এক আইনি জটিলতায় পড়ছেন ইমরান খান। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ১৫০টির বেশি মামলা রয়েছে। 

গত ৫ আগস্ট ইমরান খানকে তিন বছরের সাজা দেন আদালত। এরপর থেকে কারাগারে রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বেআইনিভাবে তোশাখানার রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির অভিযোগে এ মামলা হয়েছিল।

 ২৫ আগস্ট পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট এক পর্যবেক্ষণে জানায়, ইমরানের বিরুদ্ধে যে রায় দেয়া হয়েছে তাতে গুরুতর ত্রুটি ছিল। সে সময় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট এই রায়ের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটি দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

২০২২ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। অনাস্থা ভোটের আগে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। তারপর পিটিআই প্রধানের বিরুদ্ধে বেশকিছু মামলাও হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেয় পাকিস্তানের একটি আদালত।

এ বছরের নভেম্বরে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে নভেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে অনিশ্চয়তার কথাও জানিয়েছে দেশটির বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন জনশুমারির ভিত্তিতে সংসদীয় সীমানা পুনর্নির্ধারণ ও কাজটি সময়সাপেক্ষ হওয়ার অজুহাত দিয়েছে আনোয়ারুল হক কাকারের তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *