খুলনার নিখোঁজ রহিমা খাতুনকে জীবিত উদ্ধার 

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

খুলনার দৌলতপুরের বণিকপাড়া থেকে মরিয়ম মান্নানের মা নিখোঁজ রহিমা খাতুনকে (৫৫) জীবিত অবস্থায় ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। 

খুলনায় নিখোঁজ হওয়া রহিমা খাতুনকে জীবিত ফিরে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার মেয়ে মরিয়ম আক্তার ওরফে মরিয়ম মান্নান।

শনিবার রাতে তিনি বলেন, আমার মাকে পেয়ে গেছি। জীবিত অবস্থায় পেয়েছি। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বড় খবর আমার কাছে আর কিছু নেই। আমি অনেক খুশি। আমি এখন ঢাকার বসুন্ধরা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছি। আমি মাকে নিয়ে ঘরে ফিরতে চাই। তিনি কোথায়, কীভাবে নিখোঁজ হলেন— এগুলো জানাতে আগ্রহী নই এখন। মাকে ফিরে পেতে চেয়েছি, জীবিত পেয়েছি।

খুলনা মেট্টোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) একটি দল ২৪ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ১১টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী গ্রাম থেকে তাকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রহিমা ‘আত্মগোপনে ছিলেন বলে দাবি করেছেন মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা দৌলতপুর থানার এসআই লুৎফুল হায়দার। তিনি বলেন, ‘ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে রহিমাকে নিয়ে দৌলতপুর থানায় পৌঁছাবো।

খুলনা মহানগরের দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম জানান, অভিযান পরিচালনাকারী দলের সঙ্গে তিনিও ফরিদপুর গিয়েছেন। রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে তাঁরা এখন খুলনার পথে।

রহিমা বেগম স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন জানিয়ে ওসি বলেন, ‘তিনি সেখানে কুদ্দুস মোল্ল্যা নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ছিলেন। ২৮ বছর আগে এ বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সেখানে তিনি স্বাভাবিকভাবে থাকছিলেন। কিন্তু উদ্ধার করার পর তিনি আর কথা বলছেন না।’

গত শুক্রবার ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধারের পর দাফন হওয়া এক নারীর লাশকে নিখোঁজ রহিমার বলে দাবি করেছেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। লাশ শনাক্তের জন্য শুক্রবার ২৩ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে তিনি ফুলপুর থানায় পৌঁছান। এরপর উদ্ধারকৃত নারীর পোশাক ও আলামত দেখে দাবি করেন লাশটি তার মায়ের।

মায়ের মরদেহের খোঁজে চার বোন— মরিয়ম মান্নান, কানিজ ফাতেমা, মাহফুজা আক্তার ও আদুরী আক্তার শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানায় পৌঁছান। ডিএনএ টেস্টের জন্য ফুলপুর থানায় আবেদন করেন মরিয়ম মান্নান।

গত ২৭ আগস্ট রাতে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকায় পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নামেন রহিমা বেগম। ঘণ্টা পার হলেও তিনি বাসায় ফেরেননি। পরে মায়ের খোঁজে সন্তানেরা নিচে নেমে তাঁর ব্যবহৃত স্যান্ডেল, ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজেও না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে খুলনা মহানগরের দৌলতপুর থানায় মামলা করেন তাঁর মেয়ে মরিয়ম মান্নান। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইয়ে হস্তান্তরের আদেশ দেন আদালত। এরপর প্রক্রিয়া মেনে ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই। 

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *