শ্রীলঙ্কাকে ৭০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক

:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কাকে বাজেট ও কল্যাণ সহায়তায় ৭০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক। মার্চে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে হওয়া চুক্তির পর এটাই সবচেয়ে বড় সহায়তা পেল শ্রীলঙ্কা।

বিশ্ব ব্যাংক শ্রীলঙ্কাকে যে ঋণ দিচ্ছে, তার প্রায় ৫০ কোটি ডলার যাবে বাজেট সহায়তায়, অন্য ২০ কোটি ডলার যাবে সংকটে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের কল্যাণে।

শ্রীলঙ্কায় বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি ফারিস হাদাদ-জেরভস এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রাথমিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, অবকাঠামোগত সংস্কার এবং দরিদ্র ও সংবেদনশীলদের সুরক্ষার লক্ষ্যে এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। 

শ্রীলঙ্কায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে পাঁচ দিনের ব্যাংক ছুটি শুরু হয়েছে। সংকটে বিধ্বস্ত দেশটিতে ৪ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের অভ্যন্তরীণ ঋণ পুনর্গঠনের জন্য ব্যাংক খাতে এই ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

১৯৪৮ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর এখনই দেশটি সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি রয়েছে। এ অবস্থায় সেই দেশের সরকার ঋণ পুনর্গঠনের পরিকল্পনা হাতে নেওয়ায় তাতে আর্থিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ঋণ পুনর্গঠন করতে গিয়ে ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো হতে পারে। খবর বিবিসির।

অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ অ্যালেক্স হোমস বিবিসিকে বলেছেন, ‘শ্রীলঙ্কা সরকার লম্বা ছুটি ঘোষণা করে ঋণ পুনর্গঠনের পদক্ষেপ নেওয়ার অর্থ হলো, তারা ব্যাংক পরিচালনায় এখন ঝুঁকি দেখছে।’

এই সপ্তাহের শুরুতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে অবশ্য জনসাধারণকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে ঋণ পুনর্গঠন ‘ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে পতনের দিকে নিয়ে যাবে না।’

বিক্রমাসিংহের কার্যালয় গতকাল বুধবার জানিয়েছে যে তাঁর মন্ত্রিসভা দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি পুনর্গঠন প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। পরিকল্পনাটি সপ্তাহান্তে অনুমোদনের জন্য সংসদে জমা দেওয়া হবে।

এ নিয়ে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান নন্দলাল ওয়েরাসিংহে বলেন, ‘সরকার আশা করে যে ব্যাংক ছুটি থাকার পাঁচ দিনের মধ্যে ঋণ পুনর্গঠনের পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে।’ তিনি আরও বলেন, স্থানীয় আমানতকারীরা তাঁদের আমানতের সুরক্ষার বিষয়ে আশ্বস্ত থাকতে পারেন। ঋণ পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় তাঁদের স্বার্থের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।

শ্রীলঙ্কায় অভ্যন্তরীণ ঋণ পুনর্গঠনের পদক্ষেপটি এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে, যখন দেশটি তার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সংগ্রাম করছে।

গত বছর শ্রীলঙ্কা তার স্বাধীনতা-পরবর্তী ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের কাছে খেলাপি হয়ে পড়েছিল।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *