সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক নাদিমকে হত্যা

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

বকশীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুল আলম বাবুর পরিকল্পনায় জামালপুরে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সময় নিজেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন তিনি। 

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এই তথ্য জানান। 

র‍্যাব বলছে, সাংবাদিক নাদিম চেয়ারম্যান বাবুর অপকর্ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে নাদিমকে বিভিন্নভাবে হুমকিসহ তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলা খারিজের বিষয়টি নিয়ে ভিকটিম নাদিম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ায় বাবু আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক নাদিমকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে।

সকালে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ সীমান্ত এলাকা থেকে চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু ও তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁরা হলেন মনিরুজ্জামান মনির ও জাকিরুল ইসলাম। এ ছাড়া বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকা থেকে এই হত্যা মামলার ৪ নম্বর আসামি রেজাউল করিমকে গ্রেফতার করা হয়। 

গ্রেফতার-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আল মঈন জানান, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা ও ক্ষোভ থেকেই সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে উচিত শিক্ষা দিতে চেয়েছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। চেয়ারম্যানের নিজের সন্ত্রাসী বাহিনী নাদিমকে মোটরসাইকেল থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর তাঁকে মারধর করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। 

সাংবাদিক নাদিমের মৃত্যুর পর চেয়ারম্যানসহ তাঁর সহযোগিরা এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় আজ মামলা হয়। এতে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। 

এই হত্যার ঘটনায় চেয়ারম্যানের ছেলে রিফাতকে আসামি করা হয়েছে। তাঁকে গ্রেফতারে র‍্যাবের অগ্রগতি জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘গ্রেফতার চেয়ারম্যান বাবু জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তাঁর ছেলে সেখানে থাকার কথা। এই ঘটনার পর সে পলাতক রয়েছে। তাঁকে ধরতে আমাদের টিম কাজ করছে।’ 

উল্লেখ্য, ১৪ জুন রাতে সাংবাদিক নাদিম পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জ উপজেলার পাটহাটি এলাকায় কতিপয় সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলার শিকার হন। একপর্যায়ে অচেতন অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ১৫ জুন তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় থানা-পুলিশ ১০ জন এবং র‍্যাব চারজনকে গ্রেফতার করল।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *