:: ক্রীড়া প্রতিবেদক ::
নিউজিল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে ভারতকে টপকে শীর্ষে উঠে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। এর ফলে ৭ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা।
বিশ্বকাপে টানা চার জয়ের পর টানা তিন হারের স্বাদ নিতে হল নিউজিল্যান্ডকে। দক্ষিণ আফ্রিকার ছুঁড়ে দেয়া ৩৫৮ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৬৭ রানে অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। ১৯০ রানের ব্যবধানে জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা উঠে গেছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
৬ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে পিছিয়ে থাকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। ৬ ও ৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট করে নিয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে আছে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।
বুধবার ভারতের পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। আগে ব্যাট করতে নেমে ৮.৩ ওভারে দলীয় ৩৮ রানে ফেরেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। তিনি ২৮ বলে চার বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় ২৪ রান করে ফেরেন।
এরপর দলের হাল ধরেন কুইন্টন ডি কক ও রাসি ভ্যান ডার ডুসেন। দ্বিতীয় উইকেটে তারা ১৮৯ বলে ২০০ রানের জুটি গড়েন।
দলীয় ২৩৮ রানে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন ডি কক। তার আগে ১১৬ বলে ১০টি চার আর তিন ছক্কায় করেন ১১৬ রান। বিশ্বকাপের চলতি আসরে এটা তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। এর আগে শ্রীলংকা (১০০), অস্ট্রেলিয়া (১০৯) ও বাংলাদেশের বিপক্ষে (১৭৪) সেঞ্চুরি করেন।
ডি কক আউট হওয়ার পর তৃতীয় উইকেটে ডেভিড মিলারের সঙ্গে ৪৩ বলে ৭৮ রানের জুটি গড়েন রিশি ভেন দার ডুসেন। দলীয় ৩১৬ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১১৮ বলে ৯টি চার আর ৫টি ছক্কায় ১৩৩ রান করেন ডুসেন।
ইনিংসের শেষদিকে ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে আউট হন ডেভিড মিলার। তার আগে ৩০ বলে দুই চার আর ৪টি ছক্কায় করেন ৫৩ রান।
কুইন্টন ডি কক, রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ও ডেভিড মিলারের ব্যাটিং তাণ্ডবে ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩৫৭ রানের পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ধাক্কা খায় নিউজিল্যান্ড। দলীয় ৮ রানে ওপেনার ডেভন কনওয়েকে হারিয়ে বসে কিউইরা। ২ রানে মার্কো ইয়ানসেনের শিকার হন বাঁহাতি ব্যাটার। তিনে নামা রাচিন রবীন্দ্রকে নিয়ে সঙ্গীকে হারানো ধাক্কা বেশ ভালোভাবে সামলানোর চেষ্টা করছিলেন আরেক ওপেনার উইল ইয়ং। কিন্তু তাঁর চেষ্টাকে বেশি দূর এগিয়ে নিতে দেননি প্রথম উইকেট নেওয়া ইয়ানসেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি পাওয়া রাচিনকে ৯ রানে ফেরান বাঁহাতি পেসার। দ্বিতীয় উইকেটে ৩৭ রানের জুটি গড়েন দুজনে।
দুই সতীর্থর দেখানো পথে পরে নিজেও দ্রুত ফেরেন ইয়ং। ৩৩ রানে জেরাল্ড কোয়েৎজির বলে কুইন্টন ডি ককের কাছে ক্যাচ দিতে বাধ্য হন তিনি। তাঁর বিদায়ের সময়ে কিউইদের রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৫৬। এরপর একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ড। ব্যাটারদের এমন ব্যর্থতায় ১৬৭ রানে অলআউট হয় সর্বশেষ বিশ্বকাপের রানার্সআপরা। এতে করে ১৯০ রানের রেকর্ড জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। কিউদের বিপক্ষে আগের সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয় ছিল ১৫৯ রানের, ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে।
তবে রানটা দেড় শ পেরোতে পারে ছয়ে নামা গ্লেন ফিলিপসের সৌজন্যে। সতীর্থরা আসা যাওয়ার মিছিলে থাকলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে ফিফটি তুলে নেন তিনি। এবারের বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেওয়ার পর অবশ্য বেশি দূর ইনিংসকে এগিয়ে নিতে পারেননি ফিলিপস। ৬০ রানে শেষ ব্যাটার হিসেবে কোয়েৎজির বলে আউট হয়েছেন তিনি। ৫০ বলের ইনিংসে সমান ৪টি করে চার ও ছক্কা হাঁকিয়েছেন। ইয়ানসেন শুরু করলেও প্রতিপক্ষের ব্যাটিং অর্ডার মাঝে ধসিয়ে দিয়েছেন কেশব মহারাজ। ৪৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে প্রোটিয়াদের সেরা বোলারও এই বাঁহাতি স্পিনার।