দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হাজী সেলিমের জামিন

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে জামিন দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে হাজী সেলিমকে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন (লিভ টু আপিল) মঞ্জুর করে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচারিক আদালতের দেয়া হাজী সেলিমের ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার রায় বহাল রাখেন। পরে পূর্ণাঙ্গ সে রায় প্রকাশিত হয়। আদালত তার রায়ে জরিমানার টাকা অনাদায়ে হাজী মো. সেলিমকে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন এবং রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। আর আত্মসমর্পণ না করলে জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এ ছাড়াও রায়ে হাজী সেলিমের জব্দ করা সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করতে বলা হয়। তবে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে এ মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া ৩ বছরের কারাদণ্ড থেকে তাকে খালাস দেন হাইকোর্ট।

দুদকের করা এ মামলায় বিচারিক আদালত তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন। পরে হাইকোর্ট সে সাজা থেকে তাকে খালাস দেন। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে হাইকোর্টে এ মামলাটি আবার শুনানি হয়।

জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল বিচারিক আদালতের রায়ে তাকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

পরে ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট ১৩ বছরের সাজা বাতিল করে রায় দেন। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করে দুদক। সে আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

গত বছরের ৯ মার্চ শুনানি শেষে হাইকোর্ট তার ১০ বছরের সাজা বহাল রাখেন এবং অন্য ধারায় তিন বছরের দণ্ড থেকে তাকে অব্যাহতি দেন। এ রায়ের পর আত্মসমর্পণ করলে হাজী সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক শহিদুল ইসলাম।

পরে আত্মসমর্পণের পাশাপাশি জামিনের আবেদনসহ দুটি আবেদন করেন হাজী সেলিম। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাবিধি অনুযায়ী হাজী সেলিমকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী, হাজী সেলিমকে চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি এখনও চিকিৎসাধীন।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *