পাবনায় খেলাপি ঋণের মামলা: ১২ কৃষক কারাগারে

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

পাবনায় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেওয়ার মামলায় ১২ কৃষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তাদের মধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে গত বুধবার ওই মামলায় ৩৭ জন কৃষকের নামে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি করেন পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালত।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, চার বছর আগে বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লিমিটেড নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েছিলেন ওই কৃষকেরা। সময়মতো টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগে ২০২১ সালে ব্যাংকের পক্ষে মোজাম্মেল হোসেন নামের এক ব্যক্তি ওই কৃষকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। বুধবার সে মামলায় গ্রেফতার পরোয়ানা জারি হওয়ার পর পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার কাজ শুরু করে।

গ্রেফতার হওয়া ১২ কৃষক হলেন উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামের শুকুর প্রামাণিকের ছেলে আলম প্রামাণিক (৫০), মনি মণ্ডলের ছেলে মাহাতাব মণ্ডল (৪৫), মৃত সোবহান মণ্ডলের ছেলে আবদুল গণি মণ্ডল (৫০), কামাল প্রামাণিকের ছেলে শামীম হোসেন (৪৫), মৃত আয়েজ উদ্দিনের ছেলে সামাদ প্রামাণিক (৪৩), মৃত সামির উদ্দিনের ছেলে নূর বক্স (৪৫), রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আকরাম (৪৬), লালু খাঁর ছেলে মোহাম্মদ রজব আলী (৪০), মৃত কোরবান আলীর ছেলে কিতাব আলী (৫০), হারেজ মিয়ার ছেলে হান্নান মিয়া (৪৩), মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ মজনু (৪০) ও মৃত আখের উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান (৫০)। এরা সবাই প্রান্তিক কৃষক।

ওসি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত কৃষকেরা দাবি করেছেন তাদের অনেকেই ঋণের টাকা পরিশোধ করার পরও তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার পরোয়ানা জারি হয়েছে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, সমবায় ব্যাংক থেকে ৩৭ জন কৃষক ২৫-৩০ হাজার টাকা করে ঋণ নিয়েছিলেন। এই ঋণ সুদসহ ফেরত না দেওয়ায় ২০২১ সালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে আদালত পরোয়ানা জারি করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেফতার করে।

কৃষক উন্নয়ন সোসাইটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ময়েজ বলেন, যে অভিযোগে কৃষকদের গ্রেফতার করা হয়েছে এটি সঠিক নয়। ঋণের টাকা কৃষকরা বহু আগে পরিশোধ করেছেন। পরিশোধের রশিদ তাদের কাছে আছে।

তিনি আরও জানান, দেশে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে অনেকে খেলাপি হয়ে আছেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি আদেশ জারি হয় না। তারা গ্রেফতার হন না। অথচ কৃষকের সামান্য কয়েক হাজার টাকা ঋণ পরিশোধের পরও মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। কৃষকদের অকারণে গ্রেফতার ও কারাগারে পাঠানোয় নিন্দা জানাচ্ছি।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, গ্রেফতার কৃষকদের দাবি, সব ঋণের টাকা তারা পরিশোধ করেছেন। এরপর কেন মামলা হলো সেটি তারা জানেন না।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *