৪ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় ৪ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয় হলো প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, আশা ইউনিভার্সিটি ও ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি। তবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ দেয়া হয়নি।

স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়ায় দেশের ১৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এর মধ্যে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত চার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। 

বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মধ্যে দুইটিতে স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ এবং ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

তবে বাড়ানো এই সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধসহ কঠোর ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি। 

এদিকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ হওয়ার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। তাদের ভাষ্য, নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ হলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়বে।

সোমবার (২ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ জানান, নির্ধারিত সময়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার শর্ত পূরণ না হওয়ায় আইনের বিধান অনুযায়ী চার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায়ের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তারা নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না। চলতি মাস থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। এর আগে গতকাল রবিবার ইউজিসির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভর্তি কার্যক্রমের জন্য সাত বছরের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর তা সর্বোচ্চ আরও পাঁচ বছর বৃদ্ধি করা যায়। এই ১২ বছরের মধ্যে তাদের স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে হয়। যারা স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি বা ব্যর্থ হয়েছে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সব কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। এটা আইনে স্পষ্ট লেখা আছে। 

স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়া শিক্ষার্থীদের অধিকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘সেই হিসেবে তাদের (চার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের) আর বৈধতা নেই। দেখা গেছে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী আছে তবে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, তাহলে টাকা পয়সাগুলো কোথায় গেল? এটা শিক্ষার্থীদের একটা অধিকার তাদের একটা ক্যাম্পাস থাকবে।’ 

তবে আইনি শর্ত পূরণ সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পুনরায় ভর্তি কার্যক্রম চালু করতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নে বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘এটি সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেটা দেখা যাবে যে, তারা জমি কিনেছে এবং কাজ শুরু করে দিচ্ছে। তখন সেটি বিবেচনা করা যাবে।’

এ ছাড়া স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়া শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।

২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনে পিছিয়ে থাকা তালিকাভুক্ত ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১২টি প্রতিষ্ঠানের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে। কারও ইন্ট্রেরিয়ার ডিজাইন, কারও বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ, কারও আসবাবপত্র কেনা বাকি রয়েছে। 

এমন ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন করে তিন থেকে ছয়মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে তাদের একাডেমি ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে নির্দেশনা দেওয়া হবে। না গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে ইউজিসি। 

তিনমাস সময় বাড়ানো হয়েছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, রয়্যাল ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি, দ্য মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস। 

আর ৬ মাস সময় পেয়েছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা), গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *