:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়া রেমালের প্রভাবে দেশের ১৬ জেলায় ৮ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় রেমাল নিয়ে ১১ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দেশের প্রায় প্রতিটি বিভাগে বৃষ্টিও হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতের মধ্যে রেমাল বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
ইতিমধ্যে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির সামনের অংশ ও বায়ুচাপের পার্থক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং এসব জেলার কাছের দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা বা মধ্যরাত নাগাদ মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ)-খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর ও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বর বিপদসংকেত জারি আছে। এটি অচিরেই বদলে যাবে। রেমালের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলোর নিচু এলাকা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবের দেশের সব বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলের জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে। সাগর রয়েছে উত্তাল। আবহাওয়াবিদ আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারাদেশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ২৪ ঘণ্টায় ৩০০ থেকে ৩৫০ মিলিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম, বরিশাল ও নোয়াখালীতে বৃষ্টি হবে বেশি। চট্টগ্রাম বা কক্সবাজার অঞ্চলে এ ধরনের বৃষ্টি হলে পাহাড়ধসের ঝুঁকি থাকবে।
বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া মডেলের বরাত দিয়ে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমাল তার সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে বাংলাদেশের উপকূলের ছয় জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উপকূলীয় এলাকায় আঘাত করতে পারে। রিমাল খুবই ধীরগতিতে বাংলাদেশ অতিক্রম করবে। ঘূর্ণিঝড়টির কারণে সৃষ্ট ঘূর্ণায়মান মেঘমালা মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাংলাদেশের ওপরে থাকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে দেশজুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।