■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■
ভারতের আগরতলার কুঞ্জবনে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা টেনেহিঁচড়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ডাকে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি। আগরতলার সার্কিট হাউসে অবস্থিত গান্ধী মূর্তির সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। পরে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ছয়জনের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে গিয়ে স্মারকলিপি দেয়।
এক পর্যায়ে সমিতির বিক্ষুব্ধ সদস্যরা সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে প্রবেশ করে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলেন এবং সেই পতাকা ছিঁড়ে ফেলেন। পরে ভবনের সামনে থাকা সাইনবোর্ড ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেন।
ভারতের আগরতলার ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগরতলার হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীদের একটি বৃহৎ দলের সহিংস বিক্ষোভ ও হামলার জন্য বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে ক্ষুব্ধ। পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালানো হয়েছে। হামলা চালিয়ে প্রধান ফটক ভেঙে ফেলা হয়েছে। হামলাকারীদের অবস্থান দেখে এটাই ধারণা পাওয়া যায় তাদেরকে হামলা চালানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিন, বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, আগরতলায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রাঙ্গণ ভাঙার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কোনো অবস্থাতেই কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার সম্পত্তি লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এমন অবস্থায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের ডেপুটি/সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এই বিষয়ে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি কার্যকরী সদস্য বিকে রয় জানিয়েছেন, ডেপুটেশন দেওয়ার সময় বাইরে কী ঘটনা ঘটেছে তা তারা দেখেননি এবং তারা ডেপুটেশন দিয়ে আসার পরও কাউকে অফিসের ভিতরে দেখতে পাননি।
ঘটনার খবর পেয়ে ত্রিপুরা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের অফিসটি ঘুরে দেখেন এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন।
তবে এ বিষয়ে ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করেনি।
একই ঘটনায় বিক্ষোভ হয়েছে ভারতের কোচবিহারেও। সেখানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখায় সনাতনী হিন্দু মঞ্চ।
সংগঠনটির সদস্যরা পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া চ্যাংড়াবান্ধায় বিক্ষোভ মিছিলও করে। এই কর্মসূচি ঘিরে কড়া নিরাপত্তা ছিল সীমান্ত এলাকায়।
এদিকে বিক্ষোভ হয়েছে ভারতের পেট্টাপোল সীমান্তেও। সেখানে সমাবেশ হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে।
সমাবেশ থেকে অভিযোগ করা হয়, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। এটি বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে সীমান্তে দীর্ঘমেয়াদি অবরোধ দেয়ার ঘোষণাও দেন তারা।
বিক্ষোভের ডাক হাসনাতের
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। আজ রাত ৮টায় রাজু ভাস্কর্যে এ বিক্ষোভ মিছিল হবে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে এক ফেসবুক স্ট্যাটাস এ বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন- ভারতের আগরতলাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল।
সময় : রাত ৮টা স্থান : রাজু ভাস্কর্য