জাতীয় নির্বাচনের পর স্থানীয় নির্বাচন চায় বিএনপি

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■ 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি জাতীয় নির্বাচন আগে হতে হবে, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম সভায় মিলিত হয়েছেন। এ সভায় সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা, সংস্কার যে করা প্রয়োজন সে বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। দলগুলোর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন সংস্কারের যে রিপোর্টগুলো কমিশনগুলো যে জমা দিয়েছে সেগুলোর ওপর আলাপ-আলোচনা হবে। দলগুলো এ নিয়ে কমিশনগুলোর সঙ্গে কথা বলবে এবং একটা ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে। সেটাই মূল কথা। সেখানে আজ প্রাথমিক আলোচনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, আমরা আশা করব এ সংস্কারের ন্যূনতম যে ঐকমত্য তৈরি হবে সেটার ওপর ভিত্তি করে অতি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ ছিল শুধু ইন্ট্রোডাকশন। বিভিন্ন দল তাদের নিজস্ব মতামত দিয়েছে। পজিটিভ কন্সট্রাকটিভ কিছু আলোচনা হয়নি। আজ পরিচিতির মতো একটা ব্যাপার ছিল।

সব পজিটিভ সিদ্ধান্তকে জামায়াত স্বাগত জানাবে

 সব পজিটিভ সিদ্ধান্তকে জামায়াত স্বাগত জানাবে

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, আমরা জাতীয় ঐকমত্য কমিটির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছি। সব পজিটিভ সিদ্ধান্তকে জামায়াত স্বাগত জানাবে। আমরা এটা ঘোষণা করেছি।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

আবদুল্লা মোহাম্মদ তাহের বলেন, সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত ব্যবস্থার পরে যথাশীঘ্রই নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে আমরা আহ্বান জানিয়েছি। আজ খসড়া আলোচনা হয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত বইয়ের মাধ্যমে জানানো হবে, এবং তা নিয়ে আবার ঐকমত্য কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় হবে সেখানে আমাদের মূল প্রতিক্রিয়া জানাবো।

নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা বলেছি আগে সংস্কার বিষয়গুলো আসুক। আমরা ঐকমত্য হই। এরপর নির্বাচনের বিষয় আসবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আমরা দেখি সেটা কতটুকু আগায়।

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চাই না : পার্থ

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চান না জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ। তিনি বলেছেন, ‘স্থানীয় নির্বাচন দিলে সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদে মারামারির একটা আশঙ্কা আছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনেক বেশি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। গ্রাউন্ড রিয়েলিটি আলাদা। আওয়ামী লীগকে গ্রাউন্ড রিয়েলিটি মেনে নেবে না।’

আজ শনিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে এ কথা বলেন আন্দালিব রহমান পার্থ।

আওয়ামী লীগকে গ্রাউন্ড রিয়েলিটি মেনে নেবে না জানিয়ে বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই সন্ত্রাস কোনোভাবে যাতে না হয়। পরিবেশ যেন স্থিতিশীল থাকে। কোনো সংস্কার যাতে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত না করে। আবার অনেক রাজনৈতিক দল বলেছে যে, স্থানীয় নির্বাচন আগে হলে ভালো হবে। আমরা পাশে ছিলাম এবং সামনে পাশে থাকব। এত আত্মত্যাগ এটা যেন কোনোভাবে নষ্ট না হয়। এই অর্জনটা কোনো সাধারণ অর্জন না। আমাদের নিজেদের স্বার্থে ওটাকে যেন কোনোভাবে আন্ডারমেন্ট না করি। আগামীতে সিরিজ মিটিং হবে, আমাদের জানানো হবে।’

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা গত ছয় মাসের বর্ণনা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশসহ আমরা উনার পাশে দাঁড়িয়েছি, কীভাবে আন্তর্জাতিক সমাজ দাঁড়িয়েছে, জাতিসংঘ দাঁড়িয়েছে, সাবেক ফ্যাসিস্ট গভর্নমেন্টের এই সরকারকে নিয়ে যে পাঁয়তারা ছিল, বিভিন্ন মিথ্যে ফুলঝুঁরি ছিল আমাদের অবস্থানকে নিয়ে, জাতিসংঘের রিপোর্ট আসার পর অনেকটাই ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। আমাদের এই ঐক্য ধরে রাখতে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের আত্মত্যাগকে আমাদের কর্মকাণ্ডে কোনোভাবেই যেন অপমানিত না করে।

বিজেপি চেয়ারম্যান বলেন, আগামী ৬ মাস কীভাবে সবাই একসঙ্গে কাজ করব, যে কমিশনগুলোর কাজ হয়েছে, তারা কীভাবে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে, আমাদের কী কী প্রস্তাব আছে, সেগুলো আর কীভাবে বিস্তর আলোচনা করব, এই ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা কথা বলেছেন।

বর্তমান সরকারের ছয় মাসের কর্মকাণ্ডে আপনারা সন্তুষ্ট কি না, এমন প্রশ্ন জবাবে পার্থ বলেন, আমরা সন্তুষ্ট, আমরা সরকারের পাশে আছি। সরকারের কী ভুল হচ্ছে আবার কী হচ্ছে না, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। আমি মনে করি, এটা জনগণের সরকার।

গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হচ্ছে তার বহুত্ববাদ : মান্না

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, গণতন্ত্রের সৌন্দর্য হচ্ছে তার বহুত্ববাদ। তবে আমাদের সংস্কারটা করতে হবে ঐকমত্যের মধ্যে দিয়ে।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

মান্না বলেন, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন— যতগুলো প্রস্তাব আসবে, সেগুলো আপনাদেরকে দেওয়া হবে। আপনারা পড়ে সে বিষয়ে মতামত দেবেন এবং সেগুলো ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এরপর জনগণই বিচার করবে, কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল। এমন পরিস্থিতি যদি আসে যে কোনো একটা মত সঠিক মনে হচ্ছে না, সেটাও যুক্তিযুক্তভাবে বদলানো হবে, আর এভাবেই তৈরি হবে জাতীয় ঐকমত্য।

প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে কি না— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি মনে করি ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগেই এগুলো করা সম্ভব। তাদের এটিটিউডেও এ বিষয়টি আছে, যে সবকিছু দ্রুত সময়ের মধ্যে করার। পুরো জাতির মতামত নিয়ে তা একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করাও কিন্তু ভালো উদ্যোগ।

সরকার ক্ষমতায় আছে ঠিকই কিন্তু কর্তৃত্ব সুস্পষ্ট হয়নি : মঞ্জু

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আছে ঠিকই কিন্তু তাদের কর্তৃত্ব এখনো সুস্পষ্ট হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেছেন, এমন অবস্থায় যেকোনো নির্বাচন আমাদের জন্য হবে বিপজ্জনক। আপনারা আপনাদের কর্তৃত্ব নিশ্চিত না করে যদি নির্বাচনের দিকে যান তাহলে এ নির্বাচন হতে পারে অত্যন্ত খারাপ।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

মঞ্জু বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অনেক জায়গা থেকে আশ্বাস পেয়েছি। আমরা যদি সেই সহযোগিতা পাই তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। জাতিসংঘ যে সহযোগিতার কথা বলেছে, সেটি আমাদের জন্য বিরাট মাইলফলক। কিন্তু বিদেশিরা বলেছেন আমরা তোমাদের অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করতে পারব কিন্তু তোমাদের যে সংস্কার সেটি আমরা করতে পারব না। তাই তিনি বলেছেন, এই সংস্কারের জন্য সবার সহযোগিতা দরকার।

তিনি বলেন, এবি পার্টির পক্ষ থেকে আমরা বলেছি প্রথম যেদিন আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল তখন আমরা বলেছিলাম রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার জন্য ঐক্যের ভিত্তিতে টিম তৈরি করে দেন। কিন্তু আপনি সেটা করেননি, দেরি করে করেছেন। আমরা আরেকটা বিষয় বলেছি এই সরকারের সঠিক কর্তৃত্ব এখনো প্রতিষ্ঠা হয়নি। ফলে এমন ভঙ্গুর অবস্থা নিয়ে কীভাবে নির্বাচন করবেন? আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি জাতীয় নির্বাচন আগে করেন। কিন্তু আপনার প্রশাসনিক কর্তৃত্বটা লাগবেই।

সংস্কারের জন্য ছয় মাসের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা : মামুনুল হক

সব রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে প্রস্তাবনা আসার পর প্রধান উপদেষ্টা আগামী ছয় মাসের একটি টাইম ফ্রেম নির্ধারণ করেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক। তিনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা আশা করেছেন আগামী ছয় মাসের মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার করা যাবে। এটি নিয়ে মূল আলোচনা হয়েছে আজ।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

মামুনুল হক বলেন, স্থানীয় নির্বাচন নাকি জাতীয় নির্বাচন কোনটি আগে হবে সেইসব বিষয় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তাবনা দিয়েছে। আজ যেহেতু এরকম সিদ্ধান্তমূলক কোনো আলোচনার বৈঠক না, কাজে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি বাংলাদেশে যে সংস্কারের আলোচনা চলছে সেগুলো কিছু ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে হওয়া উচিত। এছাড়া জুলাই বিপ্লবের যে ঘোষণাপত্র সেটি অতি দ্রুত তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছি। সেই সঙ্গে ৪৭, ৭১, ২৪ ভিত্তি ধরে আগামী দিনের প্রস্তাবনা আমাদের দলের পক্ষ থেকে দিয়েছি।

আ.লীগকে সরকারিভাবে টেরোরিস্ট ঘোষণার দাবি জানিয়েছি: ববি হাজ্জাজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যার কারণে আওয়ামী লীগকে সরকারিভাবে টেররিস্ট ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

ববি হাজ্জাজ বলেন, আজকের বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। জাতীয় নির্বাচন কখন, কীভাবে হবে তা তুলে ধরেছি। তবে তার আগে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা দেখতে চাই বলে জানিয়েছি।

তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। তারা গত সবকটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতি করেছে। বিশেষ করে তারা গত জুলাই-আগস্টে নজিরবিহীন গণহত্যা চালিয়েছে। তাই দলটি এখন দেশের মানুষের কাছে টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তাই আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছি যেন সরকারিভাবে আওয়ামী লীগকে টেরোরিস্ট ঘোষণা করা হয়, সেইসঙ্গে তাদের রাজনীতি যেন নিষিদ্ধ করা হয়।

আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে এনডিএম চেয়ারম্যান বলেন, আমরা শক্তভাবে জানিয়েছি জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচন নয়। আমরা মনে করি, স্থানীয় নির্বাচনকে ঘিরে প্রচুর দাঙ্গা-কোন্দল শুরু হতে পারে। পুলিশ বাহিনী এখনই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না, তখনও পারবে না। তাই জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই যেন স্থানীয় নির্বাচন না হয়, সে কথা আমরা বলেছি।

ববি হাজ্জাজ বলেন, নির্বাচিত সরকারের বাইরে বড় কোনো সংস্কার সম্ভব নয়। তাই শিগগিরই একটা নির্বাচন দরকার। আমরা বলেছি ২০২৫ সালেই দিতে হবে এমন নয়, তবে অতি শিগগিরই যেন দেওয়া হয়। এর আগে প্রতিটি সংস্কার কমিশন যেন প্রতিটি দলের সঙ্গে বসে এবং সংস্কার নিয়ে আলোচনা করে। সংস্কার নিয়ে যদি ঐকমত্যে না আসা যায়, তাহলে সেই সংস্কার রাজনৈতিক সরকার করবে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *