ড. ইউনূস ও মো‌দির বৈঠক হচ্ছে ব্যাংককে

■ কূটনৈতিক প্রতিবেদক ■ 

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে অনুষ্ঠেয় বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে বসছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মো‌দি। শেখ হাসিনার পতনের পর এ‌টি দুই প্রতিবে‌শীর সরকারপ্রধানের মধ্যে প্রথম বৈঠক।

বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডে যাচ্ছেন ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি। সেখানে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের ইচ্ছার কথা জানিয়ে দিল্লিকে বার্তা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল ঢাকা। ওই চিঠির প্রতিউত্তর এসেছে দি‌ল্লি থেকে।

বুধবার (২ এ‌প্রিল) দি‌ল্লির সম্ম‌তির বিষয়‌টি ঢাকাকে আনুষ্ঠা‌নিকভাবে জানানো হয়েছে।

বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলিসংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেনটেটিভ খলিলুর রহমানও কথা বলেছেন। অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এই বৈঠকের জন্য সরকারিভাবে অনুরোধ করেছি। আমাদের আশা করার সংগত কারণ আছে যে বৈঠকটি হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।’

সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রের বরাত দিয়ে এই দুই নেতার বৈঠক হবে বলে খবর প্রকাশ করেছে।

২ থেকে ৪ এপ্রিল ব্যাংককে বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক চেয়ে দিল্লিকে চিঠি দিয়েছিল ঢাকা।

ঢাকার একা‌ধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, আগামী বৃহস্প‌তিবার (৪ এ‌প্রিল) ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে বসবেন ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মো‌দি। তবে কো‌ন ফরমেটে বা কত সময় দুই শীর্ষ নেতা বৈঠক করবেন, সে বিষয়ে এখনো বিস্তা‌রিত জানা যায়‌নি।

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার প্রায় আট মাস পার করলেও দুই নিকট প্রতিবেশীর সম্পর্কে টানাপড়েন থামছে না।

ব্যাংককে ইউনূস-মোদির সম্ভাব্য বৈঠক নিয়ে সাবেক এক রাষ্ট্রদূত বলেন, ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর থেকে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কে যে টানাপোড়ন চলছে, সেটি অনেকটাই কমে আসবে, যদি ব্যাংককে ইউনূস-মোদি বৈঠকে বসেন। আমি মনে করি, দুই প্রতিবেশীর একে অপরকে প্রয়োজন নেই-এ কথা বলার সুযোগ কারও নেই। যার যার নিজ স্বার্থ বিবেচনায় দুই শীর্ষ নেতার বৈঠক হলে দুই দেশেরই কল্যাণ হবে।

সম্প্রতি পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিন এক সংবাদ স‌ম্মেল‌নে ব‌লে‌ছি‌লেন, আমাদের সম্পর্কের বর্তমান যে প্রেক্ষাপট, সেই প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটিকে (‌ড. ইউনূস-‌নরেন্দ্র মো‌দি বৈঠক) আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। যদি এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় তাহলে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যে স্থবিরতা, সেটা কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

এর আগে, গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ড. ইউনূস-‌নরেন্দ্র মো‌দি বৈঠকের কথা উঠেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *