বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রো-ভিসিকে অব্যাহতি

■ বরিশাল প্রতিনিধি ■

শিক্ষার্থী আন্দোলন ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন, প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানি ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মামুন অর রশিদকে অব্যাহতি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

নতুন ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম।

মঙ্গলবার (১৩ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৬-এর ১০(১) ও ১০(৩) ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলমকে অন্তর্বর্তী ভিসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেমের সই করা প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতা পাবেন এবং বিধি অনুযায়ী পদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তাকে সার্বক্ষণিকভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন। এই নিয়োগ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

গত ৬ মে ইউজিসির পক্ষ থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিধি লঙ্ঘন ও প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ এনে একটি তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।

ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিশনের অনুমোদন না নিয়ে পিএ-টু-ডিসি পদে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়, যা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের পরিপন্থি। একইসঙ্গে, সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামের পিআরএল স্থগিত করে তাকে পুনরায় দায়িত্বে বহাল রাখা হয়। এমনকি, উপাচার্য নিজেই রেজিস্ট্রারের অতিরিক্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেন, যা নজিরবিহীন এবং ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৬’-এর ১১ ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমান উপাচার্যের প্রশাসনিক দক্ষতায় ঘাটতি রয়েছে এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিধি প্রতিপালনে পর্যাপ্ত সচেতন নন।

প্রসঙ্গত, ববি উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের অপসারণের দাবিতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আন্দোলনে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ উপাচার্যের বাসভবনে তালা লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *