শিক্ষক নিবন্ধনে বাদ যাচ্ছে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন পরীক্ষা থেকে প্রিলিমিনারি অংশ বাদ দেওয়া হতে পারে। থাকবে শুধু লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা।

প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা এই ৩টি পদ্ধতি থেকে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা বাদ দিলে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার দীর্ঘসূত্রিতা কমে আসবে বলে মনে করছেন এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ।

এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলছেন, প্রিলিমিনারি পর লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ দুটির মধ্যে একটি পরীক্ষা বাদ দিলে সময় কমে আসবে। সেক্ষেত্রে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা বাদ দেওয়ার পক্ষে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের প্রস্তাবে সায় দিলে ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা থেকে এ নিয়ম চালু করা হবে।

এনটিআরসিএ সচিব এ এম এম রিজওয়ানুল হক বলেন, বর্তমানে নিবন্ধন পরীক্ষা সম্পন্ন হয় তিন ধাপে। আমরা একটি ধাপ কমিয়ে আনতে চাচ্ছি। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিগত অনুমোদনও পাওয়া গেছে। জনপ্রশাসন ও আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগের মতামত পাওয়ার পর এনটিআরসিএর বোর্ড সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গত ২৫ মে এনটিআরসিএর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সভাকক্ষে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা অনেকটা বিসিএসের আদলে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যদের বেছে নেওয়া হয়। এরপর তাদের শূন্যপদে নিয়োগে সুপারিশ করা হয়। তবে এ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসময় লেগে যায়। অনেকে নিবন্ধন সনদ অর্জনের পরও বয়সসীমা পেরিয়ে যাওয়ায় নিয়োগবঞ্চিত হন।

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা অর্জন করতে হয় নিবন্ধন সনদ অর্জনের মাধ্যমে। এ পর্যন্ত ১৮টি শিক্ষক নিবন্ধনের মাধ্যমে অসংখ্য প্রার্থীকে সনদ দিয়ে এনটিআরসিএ।

শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগে সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। 

২০১৪ সালের পর্যন্ত এনটিআরসিএ শুধু সনদ দিত। সনদের ভিত্তিতে নিয়োগ দিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি।  

২০০৫ সাল থেকে এনটিআরসিএ শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিচ্ছে। তবে শুরুর ১০ বছর শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা ছিল সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির হাতে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর সরকার এনটিআরসিএকে সনদ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের ক্ষমতাও দেয়। এরপর চারটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১ লাখ ১৩ হাজার ৩১২ জন শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *