:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
ভারতের নতুন রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নিয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু। দেশটির ১৫তম রাষ্ট্রপতি হলেন তিনি। দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের দ্বিতীয় নারী রাষ্ট্রপতি এবং সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত প্রথম আদিবাসী নারী। পাশাপাশি স্বাধীন ভারতে জন্ম নেওয়া প্রথম রাষ্ট্রপতি হলেন তিনি।
ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা তাকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন।
সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের পরে এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
ভারতের বিদায়ী রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ এবং তার স্ত্রী সবিতা কোবিন্দ রাষ্ট্রপতি ভবনে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন৷
২৫ জুলাই ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের দিনে শপথ নেবার একটি ঐতিহ্য রয়েছে ১৯৭৭ সাল থেকে। সে ধারাবিহকতায় শপথ নেওয়া দশম রাষ্ট্রপতি হলেন দ্রৌপদী মুর্মু। তার আগে ২৫ জুলাই শপথ নেওয়া রাষ্ট্রপতির সংখ্যা ৯। ১৯৭৭ সাল থেকে শুরু করে দেশের সব রাষ্ট্রপতিই ২৫ জুলাই শপথগ্রহণ করেছেন। ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ শপথগ্রহণ করেছিলেন ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি।
বিদায়ী রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গেই সকালে সংসদ ভবনে পৌঁছান দ্রৌপদী। তাকে স্বাগত জানান ভারতের উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু, প্রধান বিচারপতি এনভি রমনা এবং লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।
রাষ্ট্রপতি হিসাবে নিজের প্রথম ভাষণে দ্রৌপদী বলেন, ”আমিই দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া প্রথম ব্যক্তি যে ভারতের স্বাধীনতার পরে জন্মগ্রহণ করেছে। ভারতের নাগরিকদের কাছে আমার আবেদন, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে আমাদের সকলকে একসঙ্গে চেষ্টা করতে হবে।”
গত ২১ জুলাই ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়। এতে তিন দফা ভোট গণনায় মোট ৫০ শতাংশের বেশি ভোটে নির্বাচিত হন বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু।
১৯৫৮ সালের ২০ জুন উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলার এক সাঁওতালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন দ্রৌপদী মুর্মু। গ্রামের প্রথম নারী হিসেবে ভুবনেশ্বরের রমাদেবী উইমেন্স কলেজ থেকে কলা বিভাগে স্নাতক শেষ করেছিলেন তিনি।
১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত উড়িষ্যা সরকারের জলসম্পদ ও শক্তি দপ্তরে জুনিয়র অ্যাসিসট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন মুর্মু। ১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত শ্রী অরবিন্দ ইন্টিগ্রাল এডুকেশন সেন্টারের সাম্মানিক শিক্ষক ছিলেন তিনি।
১৯৯৭ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন দ্রৌপদী। পরবর্তীসময়ে রায়রংপুর উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপার্সনও হয়েছিলেন।
উড়িষ্যার দুবারের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন এ আদিবাসী নেত্রী। ২০০০ সাল এবং ২০০৪ সালে বিজেপির পক্ষে ময়ূরভঞ্জ জেলার রায়রাংপুর কেন্দ্র থেকে ভোটে জিতেছিলেন তিনি।
২০০০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিজেডি-বিজেপি জোট সরকারে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল দ্রৌপদীর হাতে। পরিবহন, মৎস্য এবং পশুপালন দপ্তরের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
২০০৭ সালের উড়িষ্যার সেরা বিধায়ক হয়ে জিতেছিলেন নীলকণ্ঠ পুরস্কারও। ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন দ্রৌপদী মুর্মু।