:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
বাড়ছে বিদ্যুতের পাইকারি দাম। সোমবার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি। একমাস আগে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও শেষ পর্যন্ত তা নাকচ করে দিয়েছিল এই কমিশন।
এখনো এই এরকম কোন প্রস্তাব দেয়নি কোনো বিতরণী কোম্পানি। তবে বিতরণ কোম্পানিগুলো জানিয়েছে পাইকারি দাম বাড়লে অবশ্যই গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়াতে হবে। কারণ তারা বেশি দাম দিয়ে বিদ্যুৎ কিনে তা গ্রাহক পর্যায়ে কম দামে বিক্রি করতে পারবে না। এতে দেউলিয়া হয়ে যাবে কোম্পানিগুলো।
বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক সূত্র জানায়, মূলত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে এবার বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতের ভর্তুকি কমানোর জন্য দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আইএমএফ সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি ছাড়ের যেসব শর্ত দিয়েছে, এর মধ্যে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতের ভর্তুকি কমানো অন্যতম।
আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সাম্প্রতিক ঢাকা সফরে বিদ্যুৎ জ্বালানি বিভাগ, বিডিবি, বিপিসি, পেট্রোবাংলা এবং বিইআরসির সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকগুলোতে আইএমএফ মূলত ভর্তুকি নিয়ে আলোচনা করেছে।
বিইআরসির এক কর্মকর্তা জানান, গত মাসে পিডিবি বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তাতে বেশ কিছু ত্রুটি ছিল। এর মধ্যে তথ্যগত ঘাটতি ছিল একটি বড় বিষয়। এছাড়া পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়লে গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দামের ওপর কী প্রভাব পড়বে, তারও কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি পিডিবি। এজন্য তাদের আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়েছিল।
গত ১৩ নভেম্বর পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবটি পুনর্বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) বিইআরসির কাছে আপিল করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
বর্তমানে নিত্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে দেশের মানুষ। আয়ের বেশির ভাগ টাকা ব্যয় হচ্ছে খাবার কিনতে। এ কারণে মানুষের ওপর এখন প্রচণ্ড আর্থিক চাপ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিপিডিবি বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর উদ্যোগকে অস্বস্তিকর বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিপিডিবি সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর জন্য গত ফেব্রুয়ারিতে প্রস্তাব দেওয়া হয়। দাম ইউনিটপ্রতি পাঁচ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে আট টাকা ৫৮ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়। কমিশন গণশুনানি করে ১৮ মে। গণশুনানিতে বিইআরসির কারিগরি কমিটি ভর্তুকি বাদে ৫৮ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করে। কিন্তু মূল্যস্ফীতির চাপ ও মানুষের জীবনযাত্রার মান বিবেচনায় বিইআরসি বিদ্যুতের পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে গত মাসে।