:: নাগরিক প্রতিবেদক ::
পুলিশ হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের নামে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ইন্টারপোল ওয়েবসাইটের রেড নোটিশের তালিকায় আরাভের নাম পাওয়া গেছে।
এই তালিকায় ৬৩তম বাংলাদেশি তিনি। এর আগে গত ২০ মার্চ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জানান, আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য ইন্টারপোলকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
রেড নোটিশে আরাভ খানের বয়স ৩৫। জন্মস্থান বাংলাদেশের বাগেরহাটে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকায় তার নাম, ছবি ও পরিচয় সংযুক্ত করা হয়েছে। তার জাতীয়তা বাংলাদেশি।
২০১৮ সালে বনানীতে বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ইন্টারপোলে পাঠায় বাংলাদেশ পুলিশের শাখা। পরে এ বিষয়টি ইন্টারপোল অবহিত হলে রেড নোটিশ জারি করে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি রবিউল। তিনি আরাভ খান নাম নিয়ে ভারতীয় পাসপোর্টে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। দুবাইয়ে তিনি স্বর্ণের ব্যবসা করেন।
দুবাইয়ে আরাভ নজরদারিতে আছেন বলে গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি ফ্ল্যাটে খুন হন মামুন। পরদিন গাজীপুরের জঙ্গল থেকে তাঁর আধপোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামুনের বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম খান বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে পলাতক রবিউলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অভিযোগপত্র দেয় ঢাকা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। মামলাটি এখন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, মামুন হত্যাকাণ্ডের পর রবিউল ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি বিয়ে করেন। পরে ভুয়া নাম-পরিচয় ব্যবহার করে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেন। পাসপোর্টে নাম দেওয়া হয় আরাভ খান। এই পাসপোর্ট দিয়েই তিনি পাড়ি জমান দুবাইয়ে। এখন তিনি দুবাইয়ের বড় স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ১৫ মার্চ দুবাইয়ে তাঁর মালিকানাধীন ‘আরাভ জুয়েলার্স’ উদ্বোধন করতে যান বাংলাদেশি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ কয়েকজন তারকা। এই প্রেক্ষাপটে তিনি আলোচনায় আসেন।
রেড নোটিশ জারি হলেও দুবাই থেকে রবিউলকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া সহজ হবে না বলে মনে করছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হলেও রবিউল ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। এদিকে তাঁর ভারতীয় পাসপোর্ট বাতিল করতে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করছে বাংলাদেশ।