সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বেসিক ব্যাংক

:: নাগরিক প্রতিবেদন ::

সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বিতর্কিত ও সমস্যা জর্জরিত রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক। সোমবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন বৈঠক করেন। সেখানে বেসিক ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়। এখন নীতিমালা মেনে একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু করবে ব্যাংক দুটি।

গত ১৯ মার্চ সিটি ব্যাংকের পর্ষদকে বেসিক ব্যাংককে একীভূত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর সিটি ও বেসিক ব্যাংকের পর্ষদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। ব্যাংক দুটি একীভূত হলেও আগামী তিন বছর পৃথক আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করবে।

এ ব্যাপারে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, স্বতঃপ্রণোদিত একত্রীকরণ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের নীতি সহায়তা যেহেতু অনেক বেশি, তাই সবল ব্যাংক হিসেবে কোনো দুর্বল ব্যাংককে সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা যায় কি না, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। যেটাই করি না কেন, আগে ওই দুর্বল ব্যাংক পুনর্গঠন করব এবং ৩ বছর বা তার বেশি সময় পরে দুই ব্যালান্সশিট এক করব। এটাই আমাদের ইচ্ছা। পলিসিতে বলা আছে ব্যাংক পুনর্গঠনে তিন বছর সময় পাব। ভালো পথে এই তিনটা বছর গেলে আমি আশাবাদী সময় আরও বাড়বে। দুর্বল ব্যাংকগুলো নিয়ে আমাদের বিশ্লেষণ চলছে। এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জানান, বৈঠক হয়েছে তবে সিটি ব্যাংকের সঙ্গে বেসিক ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয় আলোচনা হয়েছে কি না জানা নেই। এমন কিছু হলে জানানো হবে।

পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সিটি ব্যাংক ভালো ব্যাংক, এখানে একীভূত হলে বেসিক ব্যাংকের জন্য ভালো হবে। কিন্তু এখানে সিটি ব্যাংকের লাভ কোথায়? তাদের শেয়ারহোল্ডারদের কী হবে? বেসিকের দায় কীভাবে মোচন করবে? একটি লস প্রতিষ্ঠান কেন নিয়েছে, এ বিষয়গুলো এখনো পরিষ্কার করেনি। ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ নেবে দেখার বিষয়। বেসিক ব্যাংক ভালো ব্যাংক ছিল। এ ব্যাংকটি যারা ধ্বংস করেছে তাদের মূলে যারা তাদের কী করবে। একীভূত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেন ছাড়া পেয়ে না যায়। সরকারের দায়িত্ব হলো অনিয়মকারীদের ধরা। কেউ যেন অপকর্ম করে পার পেয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করা। যদি অর্থ আত্মসাৎকারীদের শাস্তি না দেয়, তাহলে এ অনিয়ম ঘটতেই থাকবে।

এর আগে সরকারি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হচ্ছে বিডিবিএল। আর বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে রাকাব।

অনিয়ম-জালিয়াতিতে পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) বেসরকারি এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিষয় ঘোষণা দেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে গত ২৫ মার্চ বেসরকারি খাতের এ দুই ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) সই হয়েছে।

এ নিয়ে মোট আটটি ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, এর মধ্যে সরকারি ব্যাংক পাঁচটি আর বেসরকারি ব্যাংক তিনটি।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *