শিখ নেতা নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে কানাডায় ৩ ভারতীয় গ্রেফতার

:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::

শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরকে হত্যার দায়ে সন্দেহভাজন তিন ভারতীয়কে কানাডা সরকার গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার (৩ মে) আলবার্টার এডমন্টন শহর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

গত জুনে ভ্যাঙ্কুভারের সারে শহরে শিখ মন্দিরের বাহিরে গুলি করে হত্যা করা হয় ৪৫ বছর বয়সি নিজ্জরকে। এর কয়েক মাস পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ হত্যায় ভারত সরকারের জড়িত থাকার প্রমাণ তুলে ধরেন। এতে নয়াদিল্লির সঙ্গে কানাডার কূটনৈতিক সংকট দেখা দেয়।

রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) জানিয়েছে, সন্দেহভাজন তিনজন হলেন  ২৮ বছরের করণপ্রীত সিং, ২২ বছরের কমলপ্রীত সিং ও করণ ব্রার।

আরসিএমপির সুপারিনটেনডেন্ট মনদীপ মুকার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘ভারত সরকারের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক আছে কি না তা আমরা খতিয়ে দেখছি।’

নিজ্জার ছিলেন একজন কানাডিয়ান নাগরিক। তিনি ভারত থেকে আলাদা একটি স্বাধীন শিখ আবাসভূমি খালিস্তান গঠনের জন্য প্রচারণা চালিয়েছিলেন। নিজ্জরকে নয়াদিল্লি ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল। কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে নয়াদিল্লিকে হতাশ করেছে।

কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে গুপ্তহত্যার ষড়যন্ত্রে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ -এর ভূমিকা নিয়ে গত সপ্তাহে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হোয়াইট হাউস। 

আরসিএমপির সহকারী কমিশনার ডেভিড টেবুল বলেন, ‘এ তদন্ত এখানেই শেষ না। আমরা জানি যে এ হত্যাকাণ্ডে অন্যরা ভূমিকা পালন করে থাকতে পারে। আমরা তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করব ও গ্রেফতার করব।’ 

কানাডাভিত্তিক ওয়ার্ল্ড শিখ অর্গানাইজেশন অ্যাডভোকেসি গ্রুপের মুখপাত্র ও আইনি পরামর্শদাতা বলপ্রীত সিং বলেন, ‘আমরা এ গ্রেফতারকে স্বাগত জানাই। কিন্তু এর ফলে আরও অনেক প্রশ্নের জন্ম হচ্ছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হিট স্কোয়াডের অংশ হলেও এটা স্পষ্ট যে তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’

২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারেতে খুন হন হরদীপ সিং নিজ্জর। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত বলে অভিযোগ করে কানাডা।

মাস কয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কানাডাকে দোষারোপ করেছিলেন, খলিস্তানপন্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য। অন্য দিকে নয় মাস আগে কানাডার রাস্তায় খলিস্তানপন্থী নিজ্জরকে হত্যা করার দায় ভারতের ওপর চাপিয়েছিলের কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ভারত অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। ভারত এই অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও মন্তব্য করেছিল।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *