ইমরান খানের আরও ১০ বছর কারাদণ্ড

:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::

সাইফার মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। একই সঙ্গে তার দলের শাহ মাহমুদ কুরেশিকেও ১০ বছর সাজা দেওয়া হয়েছে। 

মঙ্গলবার পাকিস্তানের এক বিশেষ অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট আদালত এ রায় দিয়েছেন। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে এ মামলার শুনানি হয়।

এর আগে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ইমরান ও শাহ মাহমুদের বিচার বাতিল এবং অকার্যকর ঘোষণা করেছিলেন।

আদিয়ালা কারাগারে দুই পিটিআই নেতার উপস্থিতিতে বিশেষ আদালতের বিচারক আবুল হাসনাত জুলকারনাইন এ রায় ঘোষণা করেন।

পিটিআইয়ের মুখপাত্র জুলফিকার জানান, রাওয়ালপিন্ডির গ্যারিসন শহরের একটি কারাগারে এ রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।

সর্বশেষ এই রায়ের মাধ্যমে দ্বিতীয়বার দণ্ডিত হলেন ইমরান খান। এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে তিন বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিলেন বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার। যদিও ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) পরে ইমরানের সেই সাজা স্থগিত করে। তবে পরে একটি ডিভিশন বেঞ্চ দোষী সাব্যস্ত করার বিরুদ্ধে ইমরানের আবেদন খারিজ করে দেয়। অন্যদিকে,সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশির বিরুদ্ধে এটি প্রথম রায়।

এর আগে গত বছরের অক্টোবরে এই মামলায় ইমরান খান ও শাহ মাহমুদ কুরেশিকে দোষী সাব্যস্ত করেন আদালত। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে এ মামলার শুনানি হয়।

২০২২ সালের এপ্রিলে সংসদে অনাস্থার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। বর্তমানে একটি দুর্নীতি মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন তিনি।

পাকিস্তানে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে পিটিআই তাদের দলীয় প্রতীকে অংশ নিতে পারবে না। এ ছাড়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে ইমরান খানকেও। এবার নতুন করে কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হলো ইমরান খানের বিরুদ্ধে।

২০২২ সালের এপ্রিলে এক অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ইমরান খানকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। বিতর্কিত এ অনস্থা ভোটের আগে এক জনসভায় ইমরান একটি তারবার্তা প্রকাশ করেন। দেশটির ওয়াশিংটন দূতাবাস থেকে এটি তার কাছে পাঠানো হয়েছিল বলে দাবি করেন ইমরান। 

তখন ইমরান দাবি করেন, তাকে উৎখাত করার জন্য ওয়াশিংটন থেকে ষড়যন্ত্র হয়েছে। এর সঙ্গে সেনাবাহিনীও জড়িত। 

রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গত বছরের আগস্টে ইমরান খান ও কুরেশির বিরুদ্ধে এই মামলা করা হয়।

কূটনৈতিক তারবার্তাটি ইমরান খানের হাতে তুলে দেন সাবেক মুখ্য সচিব আজম খান। পরে তারবার্তাটি কোথায় রেখেছেন, ভুলে গেছেন বলে ইমরান খান তাঁকে জানান এবং বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও সেটা আর ফেরত দেননি।

গত ডিসেম্বরে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেব ইমরানের পাশাপাশি তাঁর সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশির বিরুদ্ধে বিশেষ আদালতে চলা এই মামলার বিচারকাজের ওপর ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন। আদেশে তিনি বলেছিলেন, মামলাটিতে ‘আইনি ত্রুটি’ রয়েছে।

ইমরান খান বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারে আছেন। সেখানেই বিশেষ আদালত বসিয়ে তারবার্তা ফাঁস মামলার কার্যক্রম চলছিল, তবে অভিযোগ গঠন এবং বিচারকাজ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশে সংবাদমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞার মতো বিষয়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করেন ইমরান। এরপর আদালত এ স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন।

১৩ ডিসেম্বর ইমরান ও কুরেশিকে দ্বিতীয়বারের মতো অভিযুক্ত করা হয়। এরপর অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীন গত মাসে আদিয়ালা কারাগারে নতুন করে মামলার কার্যক্রম শুরু করেন বিশেষ আদালত।

ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ইমরানের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়। সেনা সদর দপ্তরে হামলাসহ ৯ মের সহিংসতার ঘটনায় মঙ্গলবার তাকে নতুন করে অন্তত ১২টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *