■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানসহ আট কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে তাদের বিষয়ে শুনানি চলে।
শুনানি শেষে আটজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। সেই সঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে এক মাস সময় দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৯ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালে হাজির করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক পুলিশপ্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক (ওসি) আবুল হাসান, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, ডিএমপি মিরপুরের সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, ডিএমপি গুলশান থানার সাবেক ওসি মো. মাজহারুল হক এবং ডিবি ঢাকা উত্তরের সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই গণহত্যার সুপ্রিম কমান্ডার ছিলেন সাবেক পুলিশ প্রধান আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার নেতৃত্বে গণহত্যা চালানো হয়েছে।
সাবেক পুলিশ প্রধানসহ ৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণহত্যা অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে তারা যেসব অপরাধ করেছে, সেগুলো শয়তানও করতে ভয় পাবে।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের অপরাধ বর্ণনা করতে গিয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, বলকান কসাইদের মতো জিয়াউল আহসান হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তার নেতৃত্বে বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।
গত ২৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে তাদের হাজির করতে আদেশ দিয়েছিল।
পুলিশের সাবেক ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ২০ নভেম্বর তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে যারা গ্রেফতার রয়েছেন তাদের আনা হবে ট্রাইব্যুনালে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রসিকিউশন অফিসে ১২৫টির মতো অভিযোগ জমা পড়ে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বরাবরও অভিযোগ জমা পড়ছে।
গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।