■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। মিসাইল ছোড়ার পর দখলদার ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেলআবিবে সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে। এছাড়া সাইরেন শোনা যায় জেরুজালেমেও।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসমাইল হানিয়া, হাসান নাসরুল্লাহ ও আইআরজিসির ডেপুটি কমান্ডার ফর অপারেশনস জেনারেল আব্বাস নীলফরৌশানকে হত্যার জবাবে দখলদার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে।
রয়টার্সের সাংবাদিকেরা ইরান ও ইসরায়েলের প্রতিবেশী দেশ জর্ডানের আকাশসীমায় ক্ষেপণাস্ত্রকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করতে দেখেছেন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইরান একশ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
এর আগে গত এপ্রিলে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইরান। ওই মিসাইলগুলো ইরান থেকে ইসরায়েলে পৌঁছাতে সময় লেগেছিল মাত্র ১২ মিনিট।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানিয়েছে, সব ইসরায়েলি বোমা আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।
আলজাজিরা জানিয়েছে, তেলআবিবের আকাশে অগ্নিকুণ্ড ও ক্ষেপণাস্ত্র দেখা গেছে।
এর আগে ইরান থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পরিকল্পনা চলছে বলে সতর্ক করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘আমরা এই হামলার বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে রক্ষা করার জন্য প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতিকে সমর্থন করছি। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক হামলা ইরানের জন্য মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনবে।’
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের মিশন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক পোস্টে তেহরান ইঙ্গিত দিয়েছে যে, ইসরায়েলের ওপর তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সমাপ্ত হয়েছে। এতে ইসরায়েলি সরকারকে পাল্টা হামলা থেকে বিরত থাকার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে ইসরায়েলকে রক্ষায় সহায়তা করতে এবং অঞ্চলে মোতায়েন মার্কিন সেনাদের সুরক্ষিত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত।
এর আগে মার্কিন কর্মকর্তা ও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিন ইসরায়েলি কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ইরানের পরিকল্পিত হামলার লক্ষ্য তিনটি সামরিক বিমানঘাঁটি এবং তেল আবিবের উত্তরে অবস্থিত একটি গোয়েন্দা সদর দপ্তর। মঙ্গলবার দুপুরে এই সদর দপ্তর খালি করে ফেলা হয়েছে।
এর আগে, ইসরায়েল বলেছিল যে তাদের সৈন্যরা ‘সীমিত’ স্থল অভিযানের জন্য দক্ষিণ লেবাননে প্রবেশ করেছে। তবে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি বাহিনীর ওই অঞ্চলে প্রবেশের তথ্য অস্বীকার করেছে।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, লেবানন তার ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায়গুলোর একটির মুখোমুখি হয়েছে।
এদিকে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে, আজ মঙ্গলবার কমপক্ষে ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
গাজায় গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪১ হাজার ৬৩৮ জন নিহত এবং ৯৬ হাজার ৪৬০ জন আহত হয়েছে। এর আগে ইসরায়েলে গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলায় কমপক্ষে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয় এবং ২০০ জনেরও বেশি লোককে জিম্মি করে হামাস।