মোজাম্মেল বাবু, শাহরিয়ার কবির ও শ্যামল দত্ত রিমান্ডে

■ নাগরিক প্রতিবেদন ■

পৃথক দুটি হত্যা মামলায় সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু, শ্যামল দত্ত এবং ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরকে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) এই আদেশ দেন।

সকালে ভাষানটেক থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আর রমনা থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু ও লেখক শাহরিয়ার কবিরকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়।

তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহ তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সকাল ৯টার পর কড়া পুলিশ পাহারায়  হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন বাতিল চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত প্রত্যেককে ৭ দিন করে  রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় মোজাম্মেল হক বাবুকে দক্ষিণ মাইজপাড়া ও পোড়াকান্দুলিয়া সীমান্তের মাঝামাঝি এলাকায় একটি প্রাইভেটকারসহ আটক করে পুলিশে দেন স্থানীয়রা। এরপর তাকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে আনা হয়। আর গতকাল মধ্যরাতে বনানীর বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় শাহরিয়ার কবিরকে। তার বিরুদ্ধে গত ২০ আগস্ট ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গুলি চালিয়ে গণহত্যার অভিযোগ দেওয়া হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শাহরিয়ার কবীর, মুনতাসির মামুন, ইমরান এইচ সরকারসহ ১৯ জন আসামি করে এ অভিযোগ দাখিল করা হয়।

ধানমন্ডির আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা কার্যালয়ে আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম এ অভিযোগ দাখিল করেন।

এছাড়া, গত ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালীতে শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের হত্যা মামলার আসামি তিনি।

ভাষানটেক এলাকায় ফজলুর (৩১) নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। ১১ সেপ্টেম্বর ওই মামলা করেন নিহত ফজলুর ভাই মো. সবুজ। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট ভাষানটেকের দিগন্ত ফিলিং স্টেশনের সামনে ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ফজলুর। এই মামলায় শ্যামল দত্তকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

গত ১৮ জুলাই বিকেলে লিজা আক্তার (১৯) নামের এক তরুণী সিদ্ধেশ্বরী নিউ সার্কুলার রোডের একটি ফ্ল্যাটের ১৪ তলায় অবস্থান করছিলেন। সেদিন ওই এলাকায় হেলিকপ্টার ব্যবহার করে দেশি-বিদেশি অস্ত্রশস্ত্র, শত শত সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও গুলি ছোড়া হয়। এতে লিজা গুলিবিদ্ধ হন। পরে ২২ জুলাই মারা যান।  লিজা আক্তারের বাবা জয়নাল শিকদার বাদী হয়ে ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর রমনা থানায় শেখ হাসিনাসহ ১৭৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এই মামলায় শাহরিয়ার কবির ও মোজাম্মেল বাবুকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *