গাজায় ‘শক্তিশালী’ হামলার নির্দেশ নেতানিয়াহুর

■ নাগরিক নিউজ ডেস্ক ■

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘শক্তিশালী’ হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দীর্ঘ বৈঠকের পর সেনাবাহিনীকে এ নির্দেশনা দেন যুদ্ধপরাধে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু।

নেতানিয়াহুর দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করায় গাজায় ‘তাৎক্ষণিক ও শক্তিশালী’ হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েল দাবি করছে, হামাস জিম্মিদের মরদেহ ফেরত দিতে বিলম্ব করে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে। হামাস অভিযোগ করেছে, দখলদাররা মরদেহ উদ্ধারে বাধা সৃষ্টি করছে।

নেতানিয়াহুর এমন নির্দেশনার আগে গাজার রাফাতে ব্যাপক গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।  মিসর সীমান্তবর্তী এ অঞ্চলটি মঙ্গলবার বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে।

রাফাতে ঠিক কি হচ্ছে সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। কিন্তু সর্বশেষ সেখানে ইসরায়েলি সেনা ও ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের মধ্যে গুলি বিনিময় হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এরপর শুরু হয় গোলাবর্ষণের শব্দ শুরু হয়। ওই সময় রাফা এবং খান ইউনিসের পূর্ব অংশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

এছাড়া এক ইসরায়েলি সেনা আহত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আলজাজিরা।

নতুন করে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের পর গাজার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ও হতাশা তৈরি হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, এই গোলাগুলির কারণে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি ভেঙে যেতে পারে। দখলদাররা আরও বিমান হামলা ও বোমাবর্ষণ করতে পারে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে, যুদ্ধবিরতি যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী গতকাল সোমবার একজন জিম্মির মরদেহ ফেরত দেয় হামাস। ইসরায়েলের অভিযোগ, ফেরত দেওয়া মরদেহটি দুই বছর আগে উদ্ধার করা একজন অপহৃত ব্যক্তির। তাঁর মরদেহের অংশবিশেষ ইসরায়েলি বাহিনী ২০২৩ সালের শেষ দিকে উদ্ধার করেছিল। যে ১৩ জন জিম্মির মরদেহ এখনো হামাসের হাতে রয়েছে, তাঁদের কারও মরদেহ এটা নয়।

অপর দিকে হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেড ঘোষণা দিয়েছে, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করায় আজ সকালে পাওয়া একজন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর স্থগিত করছে তারা।

এক বিবৃতিতে কাসেম ব্রিগেড বলেছে, ইসরায়েলের যেকোনো ধরনের তৎপরতা জিম্মিদের মরদেহ খুঁজে বের করা, খনন করা এবং উদ্ধার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করবে। ফলে মরদেহ খুঁজে বের করতে দেরি হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ৯ অক্টোবর মিসরের পর্যটন শহর শারম আল-শেখে গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি সই হয়। পরদিন ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

গাজায় ইসরায়েলের এই ভয়ানক হামলা শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর। সেদিন গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের সশস্ত্র সদস্যরা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষকে হত্যা করে। সেই সঙ্গে ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে। এরপর গাজায় পূর্ণমাত্রায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। দুই বছর ধরে গাজায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় ৬৮ হাজার ৫০০–এর বেশি মানুষ নিহত হন।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *