■ নাগরিক প্রতিবেদন ■
দীর্ঘ ১৯ বছর ২ মাস পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় তিনি কার্যালয়ে পৌঁছালে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত তাকে ফুলেল অভ্যর্থনা জানান।
বিকেল ৩টায় গুলশানের বাসভবন থেকে নয়াপল্টনের উদ্দেশ্যে রওনা হন তারেক রহমান। তবে নয়াপল্টন এলাকায় নেতাকর্মীদের উপচে পড়া ভিড় ও স্লোগানে তার গাড়ি বহরের গতি ধীর হয়ে যায়। বিকেল সাড়ে ৩টায় কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালেও ভিড় ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করতে তার আরও ৩০ মিনিট সময় লাগে।
তারেক রহমানকে বরণ করে নিতে আগে থেকেই কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। এছাড়া কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও তাকে স্বাগত জানান।
দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে। সিএসএফ ঘিরে রেখেছে পুরো কার্যালয়। এছাড়াও পুরো নয়াপল্টন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রয়েছে কঠোর নজরদারি। এর আগে র্যাবের ‘ডগ স্কোয়াড’ দিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়েছে।
নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন সকলকে অনুরোধ করব, দ্রুত রাস্তাটাকে খালি করে দিন, যাতে সাধারণ মানুষ চলাফেরা করতে পারে। সকলে ভালো থাকবেন। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া করবেন।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আজকে এখানে আমাদের কোনো অনুষ্ঠান নেই। আমরা যদি এই রাস্তাটা বন্ধ করে রাখি তাহলে সাধারণ মানুষের চলাচলের অসুবিধা হবে। যেহেতু কোনো অনুষ্ঠান নেই। সেজন্য যত দ্রুত সম্ভব আমরা যেন এখান থেকে চলে যাই। ইনশাআল্লাহ কর্মসূচি যখন নেব তখন আপনাদের সামনে বক্তব্য রাখব। সকলে দোয়া করবেন।’
এদিকে তারেক রহমান কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আসবেন শুনে দুপুর থেকে নেতাকর্মীদের ঢল নামে নয়াপল্টনে। বিকেল সাড়ে ৩টায় পুরো সড়ক হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে সমাবেশে পরিণত হয়। ব্যাপক মানুষের ভিড় ডিঙিয়ে তারেক রহমান গাড়ি কার্যালয়ের সামনে আনতে নিরাপত্তা কর্মীদের অনেক বেগ পেতে হয়। তাঁর গাড়িবহর নয়াপল্টনের কার্যালয়ের সামনে পৌঁছলে নেতাকর্মীরা মুহুর্মুহু করতালির দিয়ে তাদের নেতাকে শুভেচ্ছা জানায়। তারেক রহমান হাত নেড়ে কর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন।
কার্যালয়ে প্রবেশের আগে তারেক রহমান বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিচে অপেক্ষমাণ হাজারো নেতাকর্মীকে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান। এ সময় তিনি সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, “আজ আমাদের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। আপনাদের ভালোবাসায় আমি অভিভূত, তবে আপনাদের অবস্থানের কারণে রাস্তায় যেন যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।” তিনি নেতাকর্মীদের শান্ত থেকে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
দীর্ঘ প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফেরার পর রোববার (২৮ ডিসেম্বর) প্রথমবারের মতো গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বসে দাপ্তরিক কাজ সেরেছিলেন তারেক রহমান। আজ তিনি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে সাংগঠনিক কাজে অংশ নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দলীয় সূত্র অনুযায়ী, তারেক রহমান সর্বশেষ ২০০৬ সালের অক্টোবরে সর্বশেষ নয়াপল্টনের এই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসেছিলেন।
