■ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ■
খাগড়াছড়িতে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং গোলাগুলির ঘটনায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
নিহত শিক্ষকের নাম আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা। তিনি খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের ইন্সট্রাক্টর (বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স) ও বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক ছিলেন।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) দুপুরে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ।
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান।সেখানে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন মৃধা গণমাধ্যমকে জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষক সোহেল রানাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল পাহাড়ি ছাত্রছাত্রীরা। বেশ কয়েক বছর আগে সোহেল রানার বিরুদ্ধে এক পাহাড়ি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। ওই ছাত্রী আদালতে এসে পাহাড়ি একটি সংগঠনের চাপে মামলা করেছে মর্মে সাক্ষ্য দিলে সোহেল রানা খালাস পান এবং চাকরিতে যোগদান করেন। সোহেল রানা চাকরিতে যোগদানের পর থেকে পাহাড়ি ছাত্ররা তার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির নানা অভিযোগ এনে প্রত্যাহার দাবি করে আসছিল।
মঙ্গলবার বেলা ১১টায় খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে একই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে অধ্যক্ষের রুমে অবরুদ্ধ করে রাখে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে গণপিটুনি দেওয়া হলে ওই শিক্ষক নিহত হন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ১৫-২০ জন পাহাড়ি কিশোর-যুবক ওই শিক্ষককে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করা খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে খাগাড়ছড়ি সদরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা এ সময় মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুর করে। ভাঙচুর হয়েছে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন কক্ষ ও আসবাবপত্র।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে খাগড়াছড়িতে মো. মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় খাগাড়ছড়ির দীঘিনায় প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের হলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এরপর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে ছড়িয়ে পড়ে সহিংসতা। এ ঘটনায় খাগাড়ছড়িতে তিনজন নিহত হয়।