:: কনক চাঁপা ::
ভাবতেই ভালো লাগে আমাদের একজন ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন! তিনি আমাদের এই অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়ে একজন পাঞ্জেরি ছিলেন। তার প্রয়ানে শোকের সাথে সাথে আমার গর্ব ও বোধ হচ্ছে এমন ভাবনায়।
চতুর্মুখী ঝঞ্জাটময় এই সময়ে তিনি ছিলেন একদম স্বাদহীন ডিস্টিল ওয়াটার এর মতো স্বচ্ছ, সত্যবান মানুষ।
সহজ সরল দেশপ্রেম কাকে বলে সবক শিখেছিলাম ওনাকে দেখে নিকট থেকে। দেখেছিলাম একজন মুক্তিযোদ্ধার আজীবন যুদ্ধ করে যাওয়ার চিত্রকল্প, প্রতিচ্ছবি কেমন হয়।
তিনি সত্যিই আমাদের একজন অবিসংবাদিত আলোর দিশারী ছিলেন।
আমরা গর্ব করে বলতে পারবো এবং পেরেছি যে এক মহান পুরুষের সময় আমরা বেঁচে ছিলাম। তাকে আমরা চাক্ষুষ করেছি। অথচ এই মানুষকে কতই না আক্রমণ করা হয়েছে টকশোগুলোতে যেন তিনি উদ্ভ্রান্ত এক পথিক! তারপর ও তিনি অটল হিমালয়ের মতো ঠাঁয় দাঁড়িয়ে বসে ওনার মতবাদই দিয়ে যেতেন। তিনি আমাদের রোজদিনের ভোরে ওঠা আটপৌরে কিন্তু দারুণ প্রয়োজনীয় সূর্য! আমরা খুবই গর্বিত এই ভেবে যে এক মহান পুরুষ জীবিত ছিলেন আমাদের সময়ে।
আমরা, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের পরবর্তী প্রজন্মকে বলবো ডাক্তার জাফরউল্লাহ সাহেবের মতো অকুতোভয় সাহসী উদ্যোমী আত্মবিশ্বাসী হও।
আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ওনার কথা বলে যাব গর্বিত আবেগ নিয়ে । তিনি খুব সাবলীল ভাবে বলে গিয়েছেন কীভাবে সত্যিকার অর্থে দেশকে ভালোবাসতে হয়।
আজকের পর থেকে একটা সাদামনের মানুষের শার্ট আমরা আর খুঁজে পাবো কি?যেখানে ওনাকেই হারালাম!
তারপর ও ভাবতে হবে আমরা আল্লাহর কাছ থেকে এসেছি তাঁর কাছেই প্রত্যাবর্তন করবো ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ আপনাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের স্থায়ী বাসিন্দা করে নেয়ার অনুগ্রহ করুন। আপনার সমস্ত ভাবনা, গবেষণা, কর্মকাণ্ড, প্রতিবাদ, আত্মবিশ্বাস এর উত্তম প্রতিদান দিন। এবং এই পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহ যেহেতু ডেকে নিয়েছেন, আল্লাহ আপনাকে বিশেষ জান্নাতির মর্যাদা দিন।
বিদায় হে কিংবদন্তি
বিদায় মহানায়ক
বিদায় ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী
(২৭ ডিসেম্বর ১৯৪১- ১১ এপ্রিল ২০২৩)
লেখিকা: দেশের অন্যতম জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পী