:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে সিআইডির একটি দল তুলে নিয়েছে বলে দাবি করেছে পত্রিকাটি।
বুধবার (২৯ মার্চ) ভোর ৫টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যায় সাদা পোষাকধারিরা।
বুধবার ভোর ৫টার দিকে আশুলিয়ায় আমবাগানের ওই বাসায় সিআইডির অভিযানের সময় সঙ্গে ছিলেন আশুলিয়া থানার (উপপরিদর্শক) এসআই রাজু মন্ডল।
রাজু মন্ডল বলেন, ‘ঢাকা থেকে সিআইডির একটি দল এসেছিল। আমি শুধু সঙ্গে ছিলাম। আমবাগানের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে একজনকে নিয়ে গেছে তারা। সকাল ৭টার দিকে অভিযান শেষ হয়। কী কী জব্দ করা হয়েছে তা আমি বলতে পারব না। এ ছাড়া সিআইডি টিমে কে কে ছিলেন, আমি তাঁদের নামও বলতে পারব না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, তাঁদের কোনো টিম শামসকে নিয়েছে কি না, তিনি এখনো নিশ্চিত নন। খোঁজখবর নিয়ে জানাবেন।
আশুলিয়ার আমবাগান এলাকার ওই বাড়ির নিচতলায় বছরখানেক ধরে ভাড়া থাকতেন শামসুজ্জামান। তাঁর গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার সদর থানা এলাকায়।
ওই বাড়ির মালিক ফেরদৌস আলম কবির বলেন, ‘আমাকে সিআইডির লোকজন এসে জিজ্ঞেস করে যে, এই বাসায় শামসুজ্জামান থাকে কি না। থাকে জানালে তাঁকে নিয়ে যায়। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, কী কারণে নেওয়া হচ্ছে। তখন আমাকে একজন বলেন, কোনো এক রিপোর্টের কারণে তাঁর নামে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’
ঘটনার সময় শামসুজ্জামানের বাসায় ছিলেন স্থানীয় সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাসায় এসে সিআইডি সদস্যরা একটি ল্যাপটপ, দুটি মুঠোফোন ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক জব্দ করেন এবং সেগুলোর তালিকা করেন। শামসুজ্জামানকে জামাকাপড় নিতে বলেন। এ সময় কক্ষের ভেতরে দাঁড় করিয়ে তাঁর (শামসুজ্জামান) ছবি তোলা হয়। পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে তাঁরা বের হয়ে যান। তিনটি গাড়িতে এসেছিলেন সিআইডি সদস্যরা।’
স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ দুজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বুধবার ভোর ৪টার দিকে ৩টি গাড়িতে প্রায় ১৪–১৫ জন শামসুজ্জামানের বাসার সামনে যান। তাঁদের সাত থেকে আটজন বাসায় ঢোকেন। একজন শামসুজ্জামানের থাকার কক্ষ তল্লাশি করে তাঁর ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, দুটি মুঠোফোন ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক নিয়ে যান। ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ওই ব্যক্তিরা শামসুজ্জামানকে নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় যান।
প্রত্যক্ষদর্শী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বটতলার নুরজাহান হোটেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন, একজন নিরাপত্তাপ্রহরী, শামসুজ্জামানসহ তাঁকে আটককারীরা সাহরি খান।
প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান ২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকার হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গিদের হামলায় নিহত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তৎকালীন সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল করিমের ছোট ভাই।
তুলে নেওয়ার সময় ওই বাড়ির মালিককে ডাকেন সিআইডি পরিচয়ধারী ব্যক্তিরা। তাঁরা বাড়ির মালিককে বলেন, শামসুজ্জামানের করা একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে রাষ্ট্রের আপত্তি আছে। তাই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে আজ সকাল ১০টার দিকে সিআইডির ঢাকা বিভাগের উপমহাপরিদর্শক মো. ইমাম হোসেনের সঙ্গে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সিআইডির ঢাকা বিভাগ তাঁর দায়িত্বে। তাঁর বিভাগের কেউ শামসুজ্জামানকে আটক করতে যায়নি।