:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শনিবার পর্যন্ত অন্তত ৯ হাজার ৫০০ জন নিহত হয়েছে। যার মধ্যে মধ্যে শিশু ৩ হাজার ৯০০ ও নারী ২ হাজার ৫০৯। আহত হয়েছে প্রায় ৩২ হাজার। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে।
এই সময়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরে নিহত হয়েছে অন্তত ১৪৭ জন। আহত হয়েছে ২২০০। গ্রেফতার হয়েছে ২ হাজারের বেশি।
ইসরায়েলি আগ্রাসনের শিকারদের মধ্যে ৭০ শতাংশ শিশু, নারী এবং বয়স্ক মানুষ। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গাজায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে এক হাজার ২৫০ শিশুসহ প্রায় দুই হাজার ২০০ মানুষ নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়েছে।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে ১৫০ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত হয়েছেন এবং ২৭টি অ্যাম্বুল্যান্স ধ্বংস হয়েছে।
ইসরায়েলকে ইচ্ছাকৃতভাবে ১০৫টিরও বেশি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। ১৬টি হাসপাতাল ও ৩২টি প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তু ও জ্বালানি স্বল্পতার কারণে পরিষেবার বাইরে রয়েছে।
গাজার হাসপাতালগুলো আহত মানুষ এবং বিপজ্জনক ঘটনার কারণে সম্পূর্ণরূপে উপচে পড়েছে। প্রতিদিন আহতদের অনেকেই মারা যাচ্ছে। কারণ গাজার হাসপাতালে তাদের জন্য কোনো থেরাপিউটিক হস্তক্ষেপের ব্যবস্থা নেই।
এ ছাড়া শুক্রবার গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুল্যান্স লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বোমা হামলায় ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৬ জন আহত হয়েছে বলেও গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় তাদের বিমান ও স্থল হামলা জোরদার করেছে। ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে তারা নিরলস বিমান হামলা চালাচ্ছে।
শনিবার রাতে মধ্যগাজার মাঘাজি শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয় অন্তত ৫১ জন।
ইসরায়েলে যুদ্ধের আন্তর্জাতিক কোনো আইনের তোয়াক্কা করছে না। তারা স্কুল, শরণার্থীশিবিবি, মসজিদ, গির্জা, হাসপাতাল, জ্বালানি ও পানির স্থাপনা, বিশ্ববিদ্যালয়, আবাসিক এলাকা তথা নির্বিচারে সর্বত্র বিমান, গোলা ও ড্রোন হামলা চালাচ্ছে।
গাজা সিটির জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় তিনবার হামলা চালায় ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১৯৫ জন নিহত হয়। নিখোঁজ হয় ১২০ জন।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় অন্তত ১৪ লাখ মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে। অবরুদ্ধ গাজার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৪ লাখ। স্থানচ্যুতদের মধ্যে উত্তর ও মধ্য গাজার প্রায় ৮ লাখ। ওই অঞ্চলে এখনও ৪ থেকে সাড়ে তিন লাখ সাধারণ মানুষ রয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এখন এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে উত্তর ও মধ্যগাজায় ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে তীব্র বন্দুক যুদ্ধ করছে হামাস। ইসরায়েল যতটা সহজে অঞ্চলটি জয় করতে পারবে বলে ধারণা করেছিল, বাস্তব অবস্থা তার চেয়ে অনেক চ্যালেঞ্জিং। তবে ওই অঞ্চলকে গাজার বাকি অংশ থেকে ইতোমধ্যে বিচ্ছিন্ন করতে পেয়েছে ইসরায়েল। এখন সেখানে স্থল যুদ্ধের পাশাপাশি বিমান থেকে নির্বিচারে বোমাও ফেলা হচ্ছে। জাবালিয়া ও মাঘাজি শরণার্থীশিবির ওই অঞ্চলে অবস্থিত।
উত্তর ও মধ্য গাজার বাহিরে গাজার অন্যত্রও বিমান ও গোলা হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরয়েল। অন্যদিকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনা ও সেটেলাররাও ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে।