:: ক্রীড়া প্রতিবেদক ::
বিশ্বকাপের হাইভোল্টেজ ম্যাচ বুহরাহ-কুলদীপের দুর্দান্ত বোলিং আর রোহিত শর্মার আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানকে উড়িয়ে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে উঠে গেল ভারত।
অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে পড়ে ১৯১ রানেই আটকে যায় পাকিস্তান, ভারত লক্ষ্য পেরিয়ে গেছে ৭ উইকেট ও ১৯.৩ ওভার হাতে রেখেই। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সাথে আগের ৭ ম্যাচেই জিতেছিল ভারত। আহমেদাবাদের দাপুটে জয় ব্যবধানটাকে করল ৮–০। টানা তিন ম্যাচ জয়ে এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট ভারত এগিয়ে গেল। অন্যদিকে টানা দুটি জয়ের পর বড় ধাক্কা খেল পাকিস্তান।
নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষের লাখো সমর্থকের গর্জন ঠেলে দারুণ ব্যাটিং শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের ব্যাটাররা। বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানরা বড় সংগ্রহের আভাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু নিজেদের ডেরায় চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের এমন ব্যাটিং শৈলী বেশি সময় দেখতে পছন্দ করেননি ভারতের বোলাররা। ১৫৫ রান পর্যন্ত ছিল পাকিস্তানের ২ উইকেট। সেখান থেকে ৩৬ রানে পাকিস্তানের ৮ উইকেট তুলে নিয়েছেন কুলদীপ যাদব-জসপ্রিত বুমরারা। তাতে ৪২.৫ ওভারে ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।
পরে অধিনায়ক রোহিত শর্মার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে জয়টাও খুব সহজে পেয়ে যায় ভারত। জয়ের কাছাকাছি গিয়ে রোহিত আউট হলেও শ্রেয়াস আয়ারের ফিফটির সৌজন্যে ১৯.৩ ওভার হাতে রেখেই লক্ষ্য তাড়া করে তারা।
গত ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিধ্বংসী রোহিত করেছিলেন সেঞ্চুরি। আজও সে পথেই হাঁটছিলেন। তবে ইনিংসের ২২ তম ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে আউট হয়ে আক্ষেপ নিয়েই ফিরেছেন ভারতীয় ওপেনার। ৬৩ বলে ৮৬ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকে। ইনিংসে ছিল ৬টি করে চার ও ছক্কার বাউন্ডারি।
আয়ার ৫৩ ও লোকেশ রাহুল ১৯ রানে অপরাজিত থাকে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। ডেঙ্গু থেকে ফিরে বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন শুভমান গিল। তবে আজ ইনিংস বড় করতে পারেননি এই ওপেনার। ১৬ রানে ফিরেছেন শাহিনের শিকার হয়ে। এরপর বিরাট কোহলি নেমেও ১৬ রানে হাসান আলীর বলে মোহাম্মদ নেওয়াজকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। তাতেও বেগ পতে হয়নি ভারতের। ৩০.৩ ওভারেই জিতে যায় তারা।
টস জিতে পাকিস্তানকে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রোহিত। পাকিস্তানের দুই ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম-উল-হক ভালো শুরু করেছিলেন। তবে থিতু হয়ে ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হয়েছেন দুজনই। গত ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা শফিক আজ ফিরেছেন ২০ রানে। ৮ম ওভারে মোহাম্মদ সিরাজের দারুণ এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন শফিক। এতে ভাঙে ৪১ রানের ওপেনিং জুটি। পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৪৯ রান তোলে পাকিস্তান।
দ্বিতীয় উইকেটে বাবর ও ইমাম জুটি বড় করার চেষ্টা করেন। এবার হার্দিক পান্ডিয়া বেশি দূর যেতে দেননি এই জুটি। ১৩ তম ওভারে ফেরান আরেক ওপেনার ইমামকে। ভাঙে বাবরের সঙ্গে ২৭ বলে ৩২ রানের জুটি। ৩৮ বলে ৩৬ রান আসে ইমামের ব্যাট থেকে।
৭৩ রানে ২ উইকেট হারিয়েছিল পাকিস্তান। তৃতীয় উইকেটে শুরুর চাপ সামলিয়ে রানের গতি বাড়াচ্ছিলেন বাবর ও রিজওয়ান। দুজনের ব্যাটে ৩০০ ছাড়ানো ইনিংসের আশাও জাগিয়েছিল পাকিস্তান। তাঁরা দলকে নিয়ে যান ১৫৫ রান পর্যন্ত। কিন্তু এরপরই বিপর্যয়ের শুরু। ২৯ তম ওভারে আউট হলেন বাবর।
এবারও ব্রেকথ্রু দিতে এগিয়ে এলেন সিরাজই। দারুণ এক নিচু স্লোয়ার ডেলিভারিতে বোল্ড করে ফেরালেন বাবরকে। তার আগে ২৯তম ওয়ানডে ফিফটি তুলে নিয়েছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। ৫৮ বলে ৫০ রান করে ফিরেছেন বাবর। রিজওয়ানের সঙ্গে ১০৩ বলে গড়েছিলেন ৮২ রানের দারুণ এক জুটি।
বাবর আউট হওয়ার পর শেষ ৩৬ রানে ৮ উইকেট হারিয়েছে পাকিস্তান। রিজওয়ান ফিরেছেন ৪৯ রানে। ভারতের হয়ে বুমরা, পান্ডিয়া, কুলদীপ ও সিরাজ দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।