দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাঁদিয়ে ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

:: ক্রীড়া প্রতিবেদন ::

বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল মানেই যেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিদায়। রোমাঞ্চকর জয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। 

চলতি বিশ্বকাপ নিয়ে রেকর্ড অষ্টমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো অস্ট্রেলিয়া। সাত ফাইনালের মধ্যে পাঁচটিই জেতে তারা। পাঁচবার সেমিফাইনাল খেলেও ফাইনালের স্বপ্নই অধরা থেকে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার। এবারের বিশ্বকাপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনটি সেমিফাইনালে হারলো তারা।  

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে মিলারের সেঞ্চুরিতে ৪৯.৪ ওভারে ২১২ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ১৬ বল বাকি থাকতেই উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের দেখা পায় অস্ট্রেলিয়া। 

মাত্র ২৪ রানে টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটারকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়া শিবিরে প্রথম ধাক্কা লাগে অধিনায়ক বাভুমা ফিরলে। তিনি শূন্য করে ফিরে যান। এরপর ডি কক ১৪ বলে মাত্র ৩ রান করে সাজঘরে হাঁটা দেন। পরে এইডেন মার্করাম ১০ ও তিনে নামা রাসি ফন ডার ডুসেন ৬ রান করে আউট হন।

এরপর ক্রিজে আসা ডেভিড মিলারকে নিয়ে দেখেশুনে ব্যাট করতে থাকেন হেনরিখ ক্লাসেন। ১৪তম ওভারে বৃষ্টির হানা দিলে ম্যাচ বন্ধ হয়। বৃষ্টি থামার পর মিলার ও ক্লাসেন মিলে বিপর্যয় সামাল দেন। ৯৫ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। দলীয় ১১৯ রানে ৪৮ বলে ৪৭ রান করে আউট হন ক্লাসেন। তার বিদায়ের পরই ফিরে যান মার্কো জেনসেন। এরপর ক্রিজে আসা জেরাল্ড কোয়েটজে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়েন মিলার। দলীয় ১৭২ রানে ৩৯ বলে ১৯ রানে আউট হন কোয়ের্টজে। এরপর ক্রিজে এসেই ফিরে যান কেশব মহারাজ।

দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে ধ্বংস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে ১১৬ বলে ৮টি চার আর ৬টি ছক্কার সাহায্যে ১০১ রান করে ফেরেন মিলার। মিলার আউট হওয়ার পর মাত্র ৯ রানের ব্যবধানে কাগিসো রাবাদা আউট হলে ৪৯.৪ ওভারে ২১২ রানে ইনিংস শেষ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স। ২টি করে উইকেট নেন জশ হ্যাজলউড ও ট্রাভিস হেড।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬০ রান করা অস্ট্রেলিয়া এরপর ৭৭ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায়।

কঠিন চাপের মধ্যে বাড়তি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন সাবেক অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ ও বর্তমান অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। দলীয় ১৭৪ রানে সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফেরার আগে ৬২ বলে ৩০ রান করে ফেরেন স্মিথ। এরপর উইকেট পড়ে থেকে টেস্টের মেজাজে ব্যাটিং করে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। 

আগের বিশ্বকাপগুলোতে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান

১৯৭৫ সালে টুর্নামেন্টের অভিষেক আসরে তারা রানার্স-আপ হয়েছিল। ৭৯ আর ৮৩ এর আসরে ফাইনালেই যেতে পারেনি তারা। ৮৭ সালে তো শিরোপাই তারা ঘরে তুলে। এরপর ১৯৯৯. ২০০৩ ও ২০০৭ সালে শিরোপার হ্যাটট্রিক জিতে তারা। ২০১১ সালে ভারতের কাছে কোয়ার্টার ফাইনাল হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায়। পরের আসরে ২০১৫ সালে শিরোপা পুনরুদ্ধার করে। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের কাছে সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নেয়।

১৯৯২ সালে নকআউট পর্বেই যেতে পারেনি অজিরা। পরের আসর ১৯৯৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে শিরোপার কাছে গিয়েই ছোঁয়া হয়নি তাদের।

২০১৫ সালে আবার অস্ট্রেলিয়া চ্যাম্পিয়ন হয়। নিউজিল্যান্ডকে পরাজিত করে তারা শিরোপা পঞ্চমবারের মতো জিতে। তবে ২০১৯ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সেমিফাইনালেই থেমে যায় তারা। সেবার স্বাগতিকদের কাছে হেরে ছিটকে যেতে হয়েছিল টুর্নামেন্ট থেকে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *