রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ভারতকে হারালো বাংলাদেশ

:: ক্রীড়া প্রতিবেদক ::

এশিয়া কাপের সুপার ফোরের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ভারতকে ৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এ জয়ের মাধ্যমে এশিয়া কাপে ১১ বছর পর ভারতের বিপক্ষে জয় পেল টাইগাররা।

নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে ভারত ৪৯.৫ ওভারে অলআউট হয় ২৫৯ রানে। ফলে ৬ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। 

এর আগে কলম্বোতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ সামির করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে কোনো রান না তুলেই সাজঘরে ফিরলেন টাইগার ওপেনার লিটন কুমার দাস। রানের দেখা পাননি তিনি। পরের ওভারের প্রথম বলেই সাজঘরের পথ ধরেছেন তানজীদ হাসান তামিম। তিনি করেন ১৩ রান।

ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। একটি চার হাঁকিয়েই সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। এদিকে কিছুক্ষণ ক্রিজে সাকিবকে সঙ্গ দেওয়া মেহেদি হাসান মিরাজ আউট হয়েছেন ১৩ রানে।

মাত্র ৫৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলের হাল ধরেন সাকিব আল হাসান ও তাওহীদ হৃদয়। এ সময় দুজন মিলে গড়েন ১০১ রানের জুটি। ফিফটি পূরণের পর সেঞ্চুরির দিকেই এগোচ্ছিলেন সাকিব। কিন্তু শার্দুল ঠাকুরের বলে আউট হওয়ার আগে ৮০ রান করেন তিনি।

ফিফটির দেখা পেয়েছেন তাওহীদ হৃদয়ও। কিন্তু এরপর আর ইনিংসটি দীর্ঘয়িত করতে পারেননি তিনি। ৮১ বলে ৫৪ রানে থামেন এই ব্যাটার। এছাড়া শামীম পাটোয়ারি আউট হন ১ রানে।

হুট করে তিন উইকেট হারিয়ে ফের চাপে পড়ে দল। কিন্তু অষ্টম উইকেট জুটিতে আপনতালে খেলতে থাকেন নাসুম আহমেদ ও শেখ মাহেদি হাসান। এ সময় দুজন মিলে গড়েন ৪৫ রানের জুটি। তাতেই আড়াইশর ছোঁয়া পায় দল। ছয়টি চার ও একটি চারে ৪৫ বলে ৪৪ রান করেন নাসুম। ২৩ বলে ২৯ রানে মাহেদি ও ৮ বলে ১৪ রানে তানজিম সাকিব অপরাজিত থাকেন।

কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ২৬৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ভারত। তানজিদ হাসান তামিমের শিকার হয়ে ফেরেন রোহিত শর্মা ও তিলক ভার্মা। 

পরে শুভমান গিলকে নিয়ে খেলা ধরেন লোকেশ রাহুল। তবে হঠাৎই থেমে যান রাহুল। দলীয় ৭৪ রানে মাহেদীর বলে আউট হন তিনি। পরক্ষণেই ইনফর্ম ইশান কিষানকে ফিরিয়ে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

৯৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত। এই পরিস্থিতিতে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন সূর্যকুমার যাদব। তবে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তিনি। সাকিব আল হাসানের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ২৬ রানে সাজঘরের পথ ধরেন হার্ডহিটার ব্যাটার।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন ওপেনার শুভমান গিল। ৩৪ বলে ২৬ রান করে আউট হন সূর্যকুমার। রবিন্দ্রো জাদেজার ব্যাট থেকে আসে ৭ রান। এদিকে ফিফটির পর ব্যক্তিগত শতক পূরণ করেন গিল। শেখ মাহেদির বলে আউট হওয়ার আগে করেন ১২১ রান।

অষ্টম উইকেট জুটিতে শার্দুল ঠাকুরকে নিয়ে ৪০ রানের জুটি গড়েন অক্ষর প্যাটেল। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি তারা। ১১ রানে ফেরেন শার্দুল। আর অক্ষর প্যাটেল আউট হন ৪২ রানে।

একে একে ভারতীয় টপঅর্ডারররা ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে থেকে যান ওপেনার শুভমান গিল। স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছোটাতে থাকেন তিনি। তাকে সঙ্গ দেন রবীন্দ্র জাদেজা। কিন্তু আচমকা থেমে যান তিনি। তবে গিল তাণ্ডব চলতেই থাকে। একের পর এক চার-ছক্কায় ক্যারিয়ারে চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।   

১২ বলে ভারতের দরকার ছিল মাত্র ১৭ রান। ডেথ ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের কার্যকারিতা সবারই জানা। ৪৮তম ওভারে আক্রমণে এসেই মুস্তাফিজ শার্দুলকে ফেরান। তবে স্বল্প পুঁজি তখনও বাংলাদেশকে স্বস্তিতে রাখতে দিচ্ছিল না। প্যাটেল চারের বাউন্ডারি মেরে আবারও পাল্টা হুমকি দিয়ে রাখেন। এরপরই ফের মুস্তাফিজের ঝলক। তাকে তুলে মারতে গিয়ে তানজিদ তামিমের তালুবন্দী হন প্যাটেল। 

এরপর শেষ ওভারে টাইগারদের প্রয়োজন ছিল এক উইকেট, আর ভারতের সামনে সমীকরণ ৬ বলে ১২ রানের। আগেই দুই উইকেট নিয়ে অভিষেক রাঙানো তানজিম হাসান সাকিব প্রথম তিন বলই ডট দেন। 

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান। দুটি উইকেট নেন তানজিম হাসান সাকিব।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *